বিরোধ থাকলেও বিচ্ছেদ নয়
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, পূর্বসূরিরা পারস্পরিক বিরোধ থাকার পরও একে অপরের দ্বিনি সম্পর্ক ও হৃদ্যতা বজায় রাখত।
অতিথিপরায়ণতার দ্বারা সামাজিক সম্পর্কের উন্নয়ন
অতিথির সমাদর ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। সাধ্যানুযায়ী অতিথির আদর-আপ্যায়ন করা কর্তব্য।
আত্মীয়তা ছিন্নকারী অভিশপ্ত
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীদের ব্যাপারে আল্লাহর ঘোষণা খুবই কঠোর। পবিত্র কোরআনে তাদের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাতের কথা রয়েছে।
আমরা সংসারজীবনের নানা চাপে আত্মীয়দের ভুলে যাই। অথচ আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় জীবন-জীবিকা উন্নত করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রিজিক (জীবিকা) প্রশস্ত হওয়ার এবং দীর্ঘ জীবনের প্রত্যাশা করে সে যেন তার আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখে। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৬)
অসুস্থদের সেবা-সাক্ষাৎ খুব গুরুত্বপূর্ণ
অসুস্থতায় সেবা শুশ্রূষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ যেকোনো সংকটে সর্বাগ্রে আত্মীয়দের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। সংকটাপন্ন ও অভাবগ্রস্ত আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতার তাগিদ দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো অভাবীকে দান করলে শুধু দানের সওয়াব আর আত্মীয়কে সহযোগিতা করলে দুটি সওয়াব, দান ও আত্মীয়তা রক্ষা। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৫৮২)
সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না
যেসব কাজ সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট করে তা বর্জন করতে হবে। মুমিন হিসেবে অন্য মুমিনের প্রতি অহেতুক কুধারণা করা যাবে না। প্রমাণ ছাড়া কারো প্রতি মন্দ ধারণা পোষণ করা ইসলামের শিষ্টাচারের বহির্ভূত কাজ। বরং অন্যের প্রতি অবান্তর কুধারণা পোষণ করা গুনাহের কাজ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা অধিকাংশ অহেতুক ধারণা পোষণ থেকে বেঁচে থাকো, কেননা কিছু কিছু ধারণা পাপতুল্য…।’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ১২)
গিবত সামাজিক অপরাধ
সামাজিক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত একটি পাপ হলো গিবত। অন্যের গিবত বা পরনিন্দা করা জঘন্যতম গুনাহ। মুমিনদের এ ধরনের মন্দ স্বভাব থেকে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা একে অপরের গোপন বিষয় জানতে ওত পেতে থেকো না, একে অপরের গিবত কোরো না, তোমাদের কেউ কি নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? অথচ তা তোমরা ঘৃণা করো, তাই আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ তাওবা কবুলকারী ও দয়ালু।’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ১২)
অপবাদ আরোপ সামাজিক অপরাধ
আরেকটি সামাজিক অপরাধ হলো কারো প্রতি অপবাদ আরোপ করা। কাউকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করার অর্থ হলো অপবাদ দেওয়া। এটি গিবতের চেয়ে মারাত্মক গুনাহ। বিশেষত কোনো সতী নারীর বিরুদ্ধে অপবাদ রটানো অনেক বড় গুনাহ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যারা সতী-সাধ্বী সরল ও ঈমানদার নারীদের ব্যাপারে অপবাদ রটায় তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত, তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ২৩)
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।