উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা না করা হলে গুরুতর হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনিতে রক্তচাপ মাপার যে প্রচলিত পদ্ধতি তাতে সিঙ্গেল ডেটা পয়েন্ট অনুসারে রক্তচাপের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়। ক্লিনিকাল সেটিংয়ের বাইরে, রক্তচাপের নির্ভরযোগ্যভাবে পরিমাপ করা কঠিন। গবেষকরা একটি ইলেকট্রনিক ট্যাটু তৈরি করেছেন যা দিয়ে মানবদেহের রক্তচাপ লাগাতার মনিটরিং করে যাওয়া সম্ভব হবে। সে আপনি ঘুমোন, ব্যায়াম করুন কিংবা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকুন। প্রকল্পের অন্যতম একজন গবেষক, দেজি আকিনভান্দে বলেছেন, “রক্তচাপ হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যা আপনি পরিমাপ করতে পারেন, কিন্তু ক্লিনিকের বাইরে প্যাসিভভাবে, কফ (cuff ) ছাড়াই এটি করার পদ্ধতিগুলি খুবই সীমিত।” ঐতিহ্যগত রক্তচাপ পরীক্ষা শুধুমাত্র একটি একক ডেটা পয়েন্ট পরিমাপ করে, যখন এই ইলেকট্রনিক ট্যাটু সব ধরনের পরিস্থিতিতে অবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যেতে পারে ।
প্রকল্পের সাথে জড়িত আরেক গবেষক রুজবেহ জাফারি বলেছেন , রক্তচাপ পরিমাপ করার অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং এটি আমাদের শরীর কীভাবে কাজ করছে সেই তথ্য প্রদান করে না।” রক্তচাপ মাপার ক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যা হলো, নিয়মিত তা জরিপ না করা। সেক্ষেত্রে কিন্তু শরীর কতটা সুস্থ তা বোঝা যায় না। আর এই সমস্যা সমাধান করতেই এই ‘ট্যাটু’ ইলেকট্রোডের উদ্ভাবন। কীভাবে কাজ করে এই ট্যাটু? প্রথমেই ত্বকে একটি বিদ্যুৎপ্রবাহ ইনজেক্ট করিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তার সাহায্যে যন্ত্রটি নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করতে থাকে।
গ্রাফিন ই-ট্যাটুর অন্যতম প্রধান উপাদান। গবেষক জাফারি বলেছেন, “ট্যাটুর সেন্সরটি ওজনহীন এবং বাধাহীন। আপনি এটিকে যেখানেই রাখুন এটি নড়াচড়া করবে না। ‘ বর্তমানে স্মার্টওয়াচগুলিকেও এখন রক্তচাপ পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে , কিন্তু এর সেন্সরগুলি এখনও রক্তচাপ পরিমাপের জন্য প্রস্তুত নয় । বর্তমানে যে কোনও বয়সেই আচমকা হানা দিতে পারে হার্ট এটাক । আর এর জন্য যে দায়ী সে হল উচ্চ রক্তচাপ। তাই রক্তচাপ নির্ণয় করার ক্ষেত্রে সব সমস্যা এড়াতে ইলেকট্রনিক ট্যাটু আগামীদিনে চিকিৎসা জগতে সাড়া ফেলে দেবে বলে আশাবাদী গবেষকরা।