আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম যাতে না বাড়ে, সেজন্য আগে থেকেই তদারকি শুরু করেছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। এর অংশ হিসাবে আমদানির তথ্য পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানতে পেরেছে, রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে এমন পাঁচটি পণ্যের এলসি খোলা কমে গেছে। এগুলো হচ্ছে পেঁয়াজ, ফল, ডাল, দুধ ও ভোজ্যতেল। জানা গেছে, সম্প্রতি পেঁয়াজ, ফল ও ভোজ্যতেলের আমদানিও কমেছে। এ অবস্থায় রমজান সামনে রেখে যেসব পণ্যের আমদানির এলসি খোলা হয়েছে, সেসব পণ্য বন্দর থেকে দ্রুত খালাস ও বিপণনে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। জানা গেছে, রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেসব পণ্যের এলসি খোলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য নানা রকম উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিষয়টি ইতিবাচক। তবে এটি যেন ঘোষণার মাঝে সীমাবদ্ধ না থাকে, সেদিকে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি থাকতে হবে। রমজানে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা বাড়লেও করোনার কারণে গত দুই বছরে বাজারে ভিন্ন চিত্র লক্ষ করা গেছে; পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি করা হলেও চাহিদা ছিল কম। সে কারণে এবার ব্যবসায়ীরা আলোচিত পণ্যগুলো আমদানির বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।
এদিকে পেঁয়াজের বাজারে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। বস্তুত বাজারে প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামই উর্ধ্বমুখী। সাধারণত দ্রব্যমূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধির বিষয়টি নির্ভর করে বাজারে পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। কিন্তু বর্তমানে দেশে এ নিয়ম খাটছে না। পণ্যের পর্যাপ্ত আমদানি ও সরবরাহ থাকলেও তা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এর পেছনে কাজ করছে বাজার সিন্ডিকেট। কখনো কখনো তারা পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। রমজান সামনে রেখে গত কয়েক বছরের মতো এবারও বাজারে বিভিন্ন পণ্যমূল্যের উর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। লক্ষণীয়, রমজানের আগে পণ্যের দাম বাড়ানো হলে পরে তা আর কমানো হয় না। কাজেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ যাতে দুষ্টচক্রের হাতে চলে না যায়, সেজন্য কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। রমজানকে বলা হয় সংযমের মাস। অথচ এ মাসেই একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতিমুনাফার আশায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয়সহ সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ীরাও আন্তরিক হবেন, এটাই প্রত্যাশা।