Friday, April 19, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামইভিএম নিয়ে জটিলতা

ইভিএম নিয়ে জটিলতা

কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এই কমিশন কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত না দিয়েই বিদায় নিয়েছে বলে সেগুলো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ইভিএম সংক্রান্ত জটিলতাগুলোর একটি হলো-ইভিএম সংরক্ষণের জন্য গুদাম ভাড়ার প্রস্তাবে বিদায়ি কমিশনের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল এবং ৩৮ জেলায় সরকার নির্ধারিত হারে গুদাম ভাড়া পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়টি হলো, ভোটগ্রহণে ধীরগতি কাটাতে বিকল্প প্রস্তাব এবং বিদ্যমান ইভিএমের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে করণীয় কী, তা নির্ধারণ। এসব জটিলতার নিষ্পত্তি কীভাবে হবে, সেজন্য ইসি সচিবালয় নতুন কমিশনের জন্য অপেক্ষা করছে। নতুন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতসংখ্যক আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, সেই পরিকল্পনা গ্রহণ।

বিদ্যমান ইভিএমে এখন পর্যন্ত ভোট কারচুপির বড় ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণে ধীরগতিসহ ভোটারদের ভোগান্তির অনেক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ইভিএম ব্যবহারের কারণে নির্বাচনি ব্যয় বৃদ্ধি, কাগজের ব্যালটের তুলনায় এ মেশিন ব্যবহারে বাড়তি জনবল নিয়োগের মতো সমস্যাও রয়েছে। এসব জটিলতা নিরসনেও হুদা কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত দিয়ে যায়নি। তবে ইসির অতিরিক্ত সচিব ও ইভিএম কারিগরি কমিটির সভাপতি অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, এ মুহূর্তে ইভিএম নিয়ে সবচেয়ে বড় জটিলতা হচ্ছে এর সংরক্ষণ সংক্রান্ত। সংরক্ষণের মতো স্থান না থাকায় দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে ৮৫ হাজারের বেশি এখনো বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে পড়ে আছে। তিনি বলেন, ইভিএম কেনার সময় এর সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে ভাবা হয়নি। সমস্যা আরও আছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে সাড়ে চার লাখ মেশিন দরকার; এখন আছে মাত্র দেড় লাখ। বিদ্যমান প্রকল্পে আরও ইভিএম কেনার কোনো টাকা ধরা নেই। নতুন করে ইভিএম কিনতে হলে আরেকটি প্রকল্প হাতে নিতে হবে।

উপরে উল্লিখিত জটিলতাগুলোর নিষ্পত্তি কীভাবে হবে, তা এক বড় প্রশ্ন। আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে নতুন কমিশনকেই জটিলতাগুলোর নিরসন করতে হবে। দু-একটি জটিলতা খুব সহজেই নিরসন করা সম্ভব। যেমন, ভোটগ্রহণে ধীরগতি কমানো যায় আঙুলের ছাপের বদলে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে। ইভিএমে কারচুপির সুযোগ রয়েছে বলে যে ধারণা চালু আছে, সেটাও দূর করা সম্ভব। পছন্দের প্রার্থীকে দেওয়া ভোট মেশিনের পাশাপাশি ছাপা কাগজেও যাতে সংরক্ষিত হয় এবং ভোটদাতা তার প্রমাণ পায়, সে ব্যবস্থা করা গেলে ভোটারদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে। নতুন কমিশন এ দিকগুলোয় নজর দেবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। তবে ইভিএম সংরক্ষণের জন্য গুদাম ভাড়া, নতুন মেশিন ক্রয় করা, আগামী নির্বাচনে ঠিক কতসংখ্যক আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করতে নতুন কমিশনকে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস। নতুন কমিশন জনগণের কতটা আস্থা অর্জন করতে পারে, তা দেখার অপেক্ষায় রইলাম আমরা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments