Friday, July 26, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামক্রমঅবনতিশীল করোনা পরিস্থিতি: স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই একমাত্র রক্ষাকবচ

ক্রমঅবনতিশীল করোনা পরিস্থিতি: স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই একমাত্র রক্ষাকবচ

ক্রমেই দেশের করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। টানা তিন মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত তিন সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হলেও সাধারণ মানুষ তা আমলে নিচ্ছে না। ফলে প্রতিদিনই শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আরও কঠোর অবস্থানে যেতে চাইছে। ডাবল ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট ছাড়া কেউ রেস্টুরেন্ট, শপিংমলে যেতে পারবে না; প্লেন, ট্রেন ও লঞ্চে যাতায়াত করতে পারবে না-এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা ছাড়া ১২ বছরের বেশি বয়সি শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না-এমন ভাবনাও রয়েছে সরকারের।

উল্লেখ করা যেতে পারে, দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনও ধরা পড়েছে বেশ কয়েকজনের দেহে। ওমিক্রন এখন সারাবিশ্বে এক আতঙ্কের নাম। এর সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি। বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাস। আবারও দেশে দেশে আরোপ করা হচ্ছে বিধিনিষেধ ও লকডাউন।

করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নতুন করে আরোপ করা হয়েছে নানা বিধিনিষেধ। যেমন-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা, রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বের না হওয়া ইত্যাদি।

এ অবস্থায় দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখার ওপরই জোর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে। পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে জনসাধারণের মধ্যে এ ব্যাপারে বড় ধরনের শৈথিল্য লক্ষ করা যাচ্ছে। রাস্তায়, এমনকি ভিড়ের মধ্যেও খুব কমসংখ্যক মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়। এ শিথিলতা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।

মাস্ক পরা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, হাত স্যানিটাইজ করা ইত্যাদি বিষয়ে মানুষকে বাধ্য করার চেয়ে বেশি জরুরি এসব ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। দ্বিতীয়ত, যত বেশিসংখ্যক সম্ভব মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। আশার কথা, দেশে এখন পর্যাপ্ত টিকা রয়েছে। সরকারের টিকা কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। শুরু হয়েছে টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রমও।

টিকা কার্যক্রমে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ভারতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের বিমান ও স্থলবন্দরগুলোয় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যারাই বিদেশ থেকে আসবেন, তাদেরই করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

দেশে আবারও লকডাউন বা সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া কারও কাম্য নয়। কারণ এতে শিক্ষা ও আয়-রোজগারে যে স্থবিরতা নেমে আসে, তা সবার জন্য ক্ষতিকর। তাই করোনা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয়, সেজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক হয়ে চলতে হবে।

ইংরেজিতে একটি কথা আছে-‘প্রিভেনশন ইট বেটার দ্যান কিউর’-অর্থাৎ রোগের চিকিৎসার চেয়ে এর প্রতিরোধই উত্তম। তাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কিংবা নিজের জীবন বিপন্ন করার পরিবর্তে করোনার আক্রমণ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments