মহান আল্লাহ আমাদের উপকার ও অনুগ্রহের শুকরিয়া আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। শোকর বা শুকরিয়া মানে কৃতজ্ঞতা। সবচেয়ে বেশি এই কৃতজ্ঞতা লাভের হকদার মা-বাবা। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি আমার প্রতি ও তোমার মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ হও।
(সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৪)
কেউ উপকার করলে তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইসলামের শিক্ষা। জাবির (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যাকে কোনো উপহার দেওয়া হয়েছে সামর্থ্য থাকলে সে যেন তার প্রতিদান (উপহারের বিনিময়ে উপহার) দেয়। আর যদি সামর্থ্য না থাকে তাহলে সে জন্য যেন তার প্রশংসা করে। যে (উপহারের বিনিময়ে) উপহারদাতার প্রশংসা করে সে তার শোকর আদায় করে। আর যে তা (উপহারের কথা) লুকিয়ে রাখে সে তার প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮১৩; তিরমিজি, হাদিস : ২০৩৪)
মানুষের শোকরের বা কৃতজ্ঞতার একটি দিক উপহারের দোষত্রুটি বর্ণনা না করা। আল-মুনাভি (রহ.) বলেছেন, ‘শোকরের পরিপূর্ণতার মধ্যে রয়েছে প্রাপ্ত উপহারের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করা। ’ (মুনাভি, ফায়জুল কাদির : ৬/২২)
আবার মানুষের শোকর আদায়ের সঙ্গে আল্লাহর শোকর আদায় যুক্ত করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের শোকর আদায় করে না, সে আল্লাহর শোকর আদায় করে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮১১; তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৪)
হাদিসটির মর্মার্থ হলো, বান্দা আল্লাহর প্রতি যে শোকর প্রকাশ করে তা তিনি কবুল করেন না যখন সে তার প্রতি মানুষের করা অনুগ্রহের শোকর প্রকাশ করে না। অথবা এর অর্থ এই যে মানুষের অকৃতজ্ঞ হওয়া যার স্বভাব ও অভ্যাস, মানুষের স্রষ্টার প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়াও তার স্বভাবে অচিরেই প্রকাশ পাবে।
এখানে মানুষের শোকর ও রবের শোকরের মধ্যে পার্থক্য আছে। রবের শোকরের মধ্যে আছে নত হওয়া, ছোট হওয়া, আল্লাহর দাসত্ব করা। আর মানুষের শোকর হলো, তার অনুগ্রহের বদলা দেওয়া, তার জন্য দোয়া করা, তার প্রশংসা করা ইত্যাদি।
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।