Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeজাতীয়১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি, এসেছে ২৭০০ টন

১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি, এসেছে ২৭০০ টন

শুল্ক প্রত্যাহারের পরও বিদেশ থেকে চাল আমদানিতে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। সরকার থেকে অনুমতি নিলেও এলসি   খুলছেন না বেশির ভাগ আমদানিকারক। আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বেশি হওয়ায় ও ডলারের রেট বাড়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় চালের বাজারের অস্থিরতাও চাল আমদানিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সমপ্রতি এক পরিপত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেয়। পরিপত্রে শুল্ক ছাড়ের আদেশ আগামী ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকার কথা জানানো হয়। খাদ্য মন্ত্রণালয় নতুন করে চাল আমদানির অনুমোদন দেয়ার প্রেক্ষিতে এনবিআর চালের শুল্ক কমানোর আদেশ দিয়েছিল। এর আগে চাল আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক, ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর এবং ৫ শতাংশ অ্যাডভান্সড ট্রেড ভ্যাটসহ (এটিভি) মোট ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ছিল। নতুন পরিপত্রের মাধ্যমে শুল্ক ২৫ শতাংশের পুরোটাই প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর নিয়ন্ত্রণমূলক আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

অগ্রিম কর হিসেবে ৫ শতাংশ এবং অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে চাল আমদানির শুল্ক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

 বড় ধরনের শুল্ক ছাড়ের পরও আমদানিতে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০শে জুন থেকে গতকাল ২০শে জুলাই পর্যন্ত মোট ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে আট লাখ টন সিদ্ধ চাল ও দেড় লাখ টন আতপ চাল রয়েছে। গত ৩০শে জুন ৯৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৯ হাজার টন চাল আমদানির জন্য অনুমতি দেয়া হয়। এই ধাপে বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২১শে জুলাইয়ের মধ্যে তাদের এলসি খোলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলা হয়। আর ১১ই আগস্টের মধ্যে তাদের আমদানি করা চাল বাজারজাত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, গতকাল পর্যন্ত অল্প সংখ্যক প্রতিষ্ঠান এলসির তথ্য জমা দিয়েছে। এ পর্যন্ত মাত্র ২৭০০ টন চাল আমদানি হয়েছে। তবে কতোগুলো প্রতিষ্ঠান আমদানি করেছে সে তথ্য জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রায় সব ব্যবসায়ী ভারত থেকে চাল আমদানি করছেন। সেখানকার বাজারে চালের দাম প্রায় বাংলাদেশের সমান। প্রতি কেজি চাল গোডাউন পর্যন্ত পৌঁছতে যে খরচ তারচেয়ে কম খরচে স্থানীয় মিলগুলোতে চাল বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে মোটা সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। আমদানি করলে এই চাল ৫৬ থেকে ৫৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হবে। 

চালের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের পরও চালের দাম এত বেশি হওয়ার পেছনে ব্যাংকের ডলার রেটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের রেট নির্ধারণ করে দিলেও ব্যাংকগুলো তা মানছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ৯৩.৯৫ টাকা দরে ডলার বিক্রির নির্দেশনা দিলেও ব্যাংকে এলসি করতে গেলে তারা প্রতি ডলার ১০০ টাকার উপর রাখছে। এ ছাড়া পরিবহন খরচ, অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জুলাইয়ে ৪৭ হাজার টন চাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার টন চাল আমদানির তথ্য তারা পেয়েছে। এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় চাল আমদানির জন্য দেয়া বরাদ্দপত্রে যে সময় বেঁধে দিয়েছে তা খুবই সংক্ষিপ্ত মনে করছেন কিছু ব্যবসায়ী। 

মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ২০শে জুলাই যে ৫৭টি প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে তাদের ৩১শে আগস্টের মধ্যে সমুদয় চাল বাজারজাত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন মনে করছেন অনেক ব্যবসায়ী। সময়সীমা বাড়ানোর জন্য অনেক ব্যবসায়ী যোগাযোগও করছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতির শীর্ষ দুই নেতার কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। উল্লেখ্য, বেসরকারি পর্যায়ে চলতি অর্থবছরে ২৭০০ টন চাল আমদানি হলেও সরকারি পর্যায়ে কোনো চাল আমদানি হয়নি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments