ভাইরাল হেপাটাইটিসজনিত কারণে পৃথিবীতে প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একজন মৃত্যুবরণ করে। লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার ও লিভার ফেইলিওরের জন্য দায়ী হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ওয়ার্ল্ড হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্সের আহ্বানে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, ভাইরাল হেপাটাইটিসের বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ভাইরাল হেপাটাইটিস প্রতিরোধে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘হেপাটাইটিস কান্ট ওয়েট’।
হেপাটাইটিসের প্রকারভেদ
হেপাটাইটিস (লিভারের প্রদাহ) সাধারণত : এ, বি, সি, ডি ও ই—এই পাঁচ ধরনের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। হেপাটাইটিস ‘এ’ ও ‘ই’ খাদ্য ও পানিবাহিত, যা থেকে একুইট (তীব্র) হেপাটাইটিস হয়ে থাকে এবং সাধারণত চার থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমে সেরে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক লিভার ফেইলিওর হতে পারে। হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাস গর্ভকালীন অবস্থায় জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। হেপাটাইটিস ‘ডি’ সাধারণত হেপাটাইটিস ‘বি’-এর সঙ্গে তার প্রদাহ ক্রিয়া করে থাকে।
প্রধান উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’। হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ রক্ত, রক্তের উপাদান এবং বডি ফ্লুইডসের (বীর্য, অশ্রু, মুখের লালা ইত্যাদি) মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনের শরীরে সংক্রমিত হয়ে থাকে।
সতর্কতা
– রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসের জন্য নিশ্চিত নিরীক্ষা
– একটি সিরিঞ্জ ও সুচ একবারই ব্যবহার করা
– নিজস্ব দাঁতের ব্রাশ, রেজার, কাঁচি ইত্যাদি ব্যবহার করা
– চুল কাটার পরে এবং শেভ করার ওয়ানটাইম ব্লেড ব্যবহার
– নিরাপদ যৌনচর্চা
– হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনোক্রমেই রক্ত বা অঙ্গ দানকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না
– নাক-কান ছিদ্র করা এবং ট্যাটু করার সময় একই সুচ ব্যবহার না করা
– সব ধরনের সার্জারি এবং দাঁতের চিকিৎসায় জীবাণুমুক্ত যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে
ভাইরাল হেপাটাইটিসের চিকিৎসা
হেপাটাইটিস ‘বি’-এর চিকিৎসা দীর্ঘদিন, মাসের পর মাস চালিয়ে যেতে হয়, কোনো কোনো সময় বছরের পর বছর। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, হঠাৎ অর্থের অভাবে রোগী ওষুধ বন্ধ করে দেয়। এতে হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস ফ্লেয়ার হয়ে রোগীর অবস্থা জটিলের দিকে চলে যায়। হেপাটাইটিস ‘সি’-এর মুখে খাওয়ার ওষুধও বেশ দামি। আশার কথা, সরকারিভাবে কোনো কোনো সেন্টারে হেপাটাইটিসের ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
পরামর্শ দিয়েছেন
অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী
মহাসচিব, ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ