১৯৫৪ সালে প্রকাশিত ইউনেসকোর Studies on Compulsory Education-এ উল্লেখ করা হয়েছে : ‘মুসলিম শাসনামলে শিক্ষা ও ধর্মকে অত্যন্ত অঙ্গাঙ্গিভাবে বিবেচনা করা হতো।’ সে আমলে মুসলিম পরিবারের শিশুদের হাতেখড়ি হতো পবিত্র কোরআনের শিক্ষার মাধ্যমে। ইতিহাসবিদ এ আর মল্লিক লিখেছেন : ‘বাংলার মুসলমানদের অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে যখন কোনো সন্তানের বয়স চার বছর চার মাস চার দিন পূর্ণ হতো, তখন তার বিদ্যাশিক্ষার সূচনা হতো। একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পবিত্র কোরআনের কিছু অংশ শিশুকে পাঠ করে শোনানো হতো। শিশু তা পুনরাবৃত্তি করত। এটা ছিল প্রতিটি মুসলিম পরিবারের অপরিহার্য প্রথা।’
(A R Mallic, British Policy And Muslim in Bengal, p.149) কিন্তু পরিবর্তিত সমাজব্যবস্থায় নানা কারণে মুসলমানদের সন্তানরা এখন আর আগের মতো কোরআন শেখার সুযোগ পাচ্ছে না। এমনকি অনেকের সন্তান কোরআন শিখতে আগ্রহ পায় না। এই শিশুদের কোরআনের সঙ্গে পরিচয় করানো এবং কোরআন পাঠে আগ্রহী করতে তাদের মাতা-পিতারা উদ্বিগ্ন বোধ করেন।
সাধারণভাবে শিশু তা-ই করে, যা সে তার মাতা-পিতাকে করতে দেখে। মাতা-পিতা যে কাজ করেন, সন্তান সেই কাজ অনুকরণ করে।
সুতরাং এ সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় হলো—
প্রথমত, মাতা-পিতা প্রথমে নিজে কোরআন পাঠে অভ্যস্ত হোন। নিজেরা বেশি বেশি কোরআন চর্চা করুন, এতে সন্তান মাতা-পিতার দেখাদেখি কোরআন পড়তে আগ্রহী হবে।
দ্বিতীয়ত, কোরআন পাঠে আগ্রহী শিশুদের সঙ্গে তাদের মিশতে দিন। এতে পর্যায়ক্রমে সেও কোরআন পড়তে চাইবে।
তৃতীয়ত, কোরআন পাঠে উৎসাহিত করে পুরস্কার দিন। সন্তানের বিশেষ শখ পূরণ করুন এবং তাকে কোরআন পাঠে উদ্বুদ্ধ করুন। ইনশাআল্লাহ ধীরে ধীরে তার ভেতর কোরআন পাঠের প্রেরণা তৈরি হবে।