অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি সংকট অন্তত দুই সপ্তাহে কাটছে না।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক মন্ত্রী কাঞ্চনা বিজয়াসেকারা জ্বালানি সংকট নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী সোমবার জানান, দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই মুহূর্তে জ্বালানি কেনার জন্য সাড়ে ১২ কোটি ডলার দিতে পারবে; কিন্তু আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রয়োজন ৫৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
এর আগে কাঞ্চনা বিজয়াসেকারা গত রবিবার জানান, সরকারের কাছে এক দিনের নিয়মিত চাহিদার চেয়েও কম পেট্রল মজুদ রয়েছে।
আগামী দুই সপ্তাহেরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশে পেট্রলের নতুন চালান আসার সম্ভাবনা নেই।
পেট্রল ও ডিজেল সমস্যার কারণে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সব সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে অত্যাবশ্যকীয় নয়, এমন গাড়ির জন্য ডিজেল ও পেট্রল বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়ির জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরকার দাবি করছে, আগামী ২২ বা ২৩ জুলাই পেট্রলের চালান হাতে আসবে। তবে ডিজেলের একটি চালান সপ্তাহের শেষ দিকে আসার কথা রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বর্তমান জ্বালানি সংকট অর্থনীতির অন্য খাতগুলোকেও প্রভাবিত করছে। দেশের প্রধান অর্থনৈতিক খাত পর্যটনশিল্প থেকে শুরু করে টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাত সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ শক্তিশালী করতে এসব খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জ্বালানি সরবরাহ ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রপ্তানিমুখী এসব শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানো জরুরি। জ্বালানি খাতের সঙ্গে এসব শিল্প খাত অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকায় শ্রীলঙ্কা এক দুষ্টচক্রে পড়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি শিল্প খাতের মধ্যে রয়েছে পর্যটন। পরিবহন ও হোটেলেও বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো অনেক কিছুই রয়েছে, যা জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল। জ্বালানি সংকটের জেরে পর্যটন খাতে বুকিং হ্রাস পেয়েছে ৬০ শতাংশ। বিকাশমান তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংকটের জেরে ইন্টারনেট ব্যবস্থায়ও ধস নেমেছে।
সূত্র : বিবিসি, সিলোন টুডে