Tuesday, April 16, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামশিল্প খাতে সংকটের আশঙ্কা: ডলার সংকট দূর করা জরুরি

শিল্প খাতে সংকটের আশঙ্কা: ডলার সংকট দূর করা জরুরি

দেশের শিল্প খাতে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানা গেছে, ডলার সংকটের কারণে শিল্পের উপকরণ আমদানিতে নতুন এলসি খোলার হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এতে আগামীতে শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি কম হওয়ায় অবধারিতভাবে শিল্প উৎপাদনও কমবে। এছাড়া রপ্তানি শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ‘ব্যাক টু ব্যাক এলসি’ও কমেছে।

পাশাপাশি শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস ও বিদ্যুতের জোগান দিতে না পারায় উৎপাদন কমছে। অবশ্য শিল্প উপকরণের আমদানি কমে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। এ অবস্থায় চড়া দামে পণ্য আমদানি করে সেগুলো বিক্রি করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। এজন্য তারা নতুন বিনিয়োগে না গিয়ে বরং চলমান ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। এতে আশা করা যায়, কিছু শিল্প অন্তত ভালো থাকবে; যেগুলোয় কর্মসংস্থানও হবে। এর বাইরে অন্যান্য শিল্পের বিষয়ে এখন টিকে থাকার নীতি গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে রপ্তানির ক্ষেত্রে মন্দার আঘাত কম-এমন দেশের প্রতি নজর দিতে হবে। এবারের সংকটের মূল কারণ হচ্ছে বৈশ্বিক। দেশে ডলার সংকট এ মন্দাকে প্রকট করেছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে রেমিট্যান্সের দিকে বেশি জোর দিতে হবে। সরকার অবশ্য নানা উপায়ে রেমিট্যান্স বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বৈদেশিক শ্রমবাজারের পরিসর বৃদ্ধির পাশাপাশি হুন্ডির ব্যবহার কমাতে সক্ষম হলে সুফল পাওয়া যাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

দীর্ঘদিন ধরেই দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো নয়। গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় অনেক উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করেও উৎপাদনে আসতে পারছেন না। নতুন বিনিয়োগেও আগ্রহী হচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে যেমন সংকটে নিমজ্জিত করেছে, একইভাবে দেশের অর্থনীতিও বিভিন্ন নেতিবাচক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে।

লন্ডনভিত্তিক সাময়িকী দি ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট করোনা মহামারির প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বিপর্যয় নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এর সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যোগ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে, যা থেকে মুক্তির উপায় খোঁজা জরুরি। এ বিষয়ে সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments