অ্যান্টিগা টেস্টে হার নিশ্চিত হয়েগিয়েছিল তৃতীয় দিনেই। টাইগারদের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দিতে চতুর্থ দিনে মাত্র ৭ ওভারে জয় নিশ্চিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে উপহার দেয় লজ্জার ৭ উইকেটের হার। এমন পরাজয়ের জন্য টাইগার ব্যাটারদেরই কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছেন নেতৃত্ব ফিরে পাওয়া সাকিব আল হাসান। দলকে শুন্যতে রেখে গিয়েছিলেন এই অধিনায়ক। ফের শুরু করলেন শুন্য হাতেই। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য কোন ভনিতা করেননি, হার নিয়ে সোজা দায়টা চাপিয়ে দিলেন ব্যাটারদের উপর। তিনি বলেন, ‘এটা (ব্যাটিং) গ্রহণযোগ্য নয়। এরকম আমরা নিয়মিতই করছি এখন। গত ৪-৫ টেস্ট ধরেই এটা হচ্ছে।
রান করা ও উইকেটে টিকে থাকার পথ ব্যাটসম্যানদের খুঁজে বের করতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে এভাবেই এগোতে হয়। এরপর বোলারদের দায়িত্ব। এটাই সরল সমীকরণ, যেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’ এ জয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপে পয়েন্ট নিশ্চিত করার পাশাপাশি সিরিজেও ১-০ তে এগিয়ে গেল ক্যারিবীয়রা। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয়ের পর এই নিয়ে ৬ টেস্টের ৫টিই বড় ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। বাকি একটি হয়েছে ড্র। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৯ ম্যাচে ১ জয় নিয়ে পড়ে রইল তারা তলানিতেই টাইগাররা।
জয়ের পথটা তৃতীয় দিনই তৈরি করে রেখেছিল স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৫ রানের দূরত্ব ঘোচাতে খুব বেশি সময় নিল না স্বাগতিক ব্যাটাররা। বাংলাদেশের বোলাররা পারলেন না আর কোনো প্রভাব রাখতে। জন ক্যাম্পবেল ও জার্মেইন ব্ল্যাকউডের জুটিতেই ক্যারিবীয়ানরা ম্যাচ জিতে গেল অনায়াসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ৮৪ রান। সৈয়দ খালেদ আহমেদের তোপে রান তাড়ার শুরুতে ৩ উইকেট হারালেও এরপর আর কোনো হোঁচট খায়নি তারা। তৃতীয় দিন শেষ করে ৩ উইকেটে ৪৯ রানে। গতকাল চতুর্থ দিন সকালে ৭ ওভারে জয়ের অনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলে ক্যারিবিয়ানরা। অনিয়মিত স্পিনার নাজমুল হোসেন শান্তর ওভারে চার ও ছক্কা মেরে খেলা শেষ করে দেন জন ক্যাম্পবেল। বাঁহাতি ওপেনার অপরাজিত থাকেন ৫৮ রানে। ব্ল্যাকউড জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন ২৬ রানে। টেস্ট শুরুর আগের দিন ফিটনেস পরীক্ষায় উতরে যিনি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন, সেই কেমার রোচ ৭ উইকেট নিয়ে হয়েছে ম্যান অব দা ম্যাচ। টেস্ট ইন্ডিজ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৯ ম্যাচে জিতল ৩টিতে।
বাংলাদেশ অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অলআউট হয় মাত্র ১০৩ রান করে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ৫১ রানের সাথে তামিম ইকবালের ২৯ রানে মান বাঁচে। দলের ৬ ব্যাটারই যে ফিরেছে কোনো রান না করে। এরপর টাইগার বোলাররা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৫ রানে আটকে রাখলেও বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয় ফিরে আসে দ্বিতীয় ইনিংসেও। এবার ৬ উইকেট হারাতে হয় ১০৯ রানে। শেষ পর্যন্ত সাকিব ৬৩ ও নুরুল হাসান সোহান ৬৪ রান করে জোড়া ফিফটিতে দলের মান বাঁচায়। এই দুজন ফিরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগাররা গুটিয়ে যায় ২৪৫ রানে। গেল ৫ বছরে ২০ বার ১০০’র ঘরে পৌঁছে অলআউট হয়েছে টাইগাররা। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এমন বাজে ব্যাটিংয়ের নজির ১৫ ইনিংসে ছিল চোখে পড়ার মত। এর মধ্যে চারবার ১০০’র নিচের অলআউট হওয়ার লজ্জা তো আছেই। ২০১৮তে অ্যান্টিগায় ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে নিজেদের সর্বনিম্ন টেস্ট স্কোরের (৪৩) রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। একই মাঠে ৪ বছরেও পরিস্থিতি বদলায়নি।