রাশিয়াকে মোকাবেলায় প্রথম থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে সামরিক জোট ন্যাটো। এই সংঘাত এখন ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যেকার যুদ্ধ হিসেবেই বেশি পরিচিতি পাচ্ছে। তারপরেও ন্যাটো সবসময় নিজেকে যুদ্ধের একটি পক্ষ বলা থেকে বিরত ছিল। রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়াতে সব ধরণের সাবধানতা অবলম্বন করেছে জোটটি। তবে মঙ্গলবার ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টল্টেনবার্গ সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার জয় হবে সমগ্র পশ্চিমা মিত্রের পরাজয়। এ খবর দিয়েছে আরটি।
যদিও তিনি সঙ্গে সঙ্গেই দাবি করেন, এই সংঘাতে ন্যাটো কোনো তৃতীয় পক্ষ নয়। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্টল্টেনবার্গ। এসময় তিনি ইউক্রেনকে অস্ত্র প্রদান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়ার পরাজয় নিশ্চিত করা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরেন তিনি।
ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে গিয়ে নিজেদের অস্ত্র ভাণ্ডারেও টান পড়ছে পশ্চিমা দেশগুলোর। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত আগস্ট মাসে এক রিপোর্টে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ১৫৫ মিমি আর্টিলারির গোলার সংকট দেখা দিয়েছে।
একই পরিস্থিতিতে পড়েছে জার্মানিও। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্টল্টেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনের এই যুদ্ধ পশ্চিমাদের জন্যও অস্তিত্বের সংকট। যদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধে বিজয়ী হন তাহলে এটি শুধু ইউক্রেনীয়দের পরাজয় হবে না, এটি আমাদেরও পরাজয় হবে।
গত কয়েক বছর ধরেই ইউক্রেনে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে ন্যাটো। রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর এই অস্ত্র দেয়ার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। শুধু সামরিক অস্ত্রই নয়, গোয়েন্দা তথ্য ও আর্থিক সহযোগিতাও অব্যাহত আছে। গত ৭ মাসে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়েছে ইউক্রেনে। যদিও এরপরেও ন্যাটো বারবার দাবি করছে যে, তারা ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো পক্ষ নয়। মস্কো যদিও বিষয়টি সেভাবে দেখছে না।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধের উস্কানি দেয়ার অভিযোগ এনেছেন। তিনি ইউক্রেনকে ন্যাটোর একটি ‘প্রক্সি’ বলে বর্ণনা করেন। অপর দিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, রাশিয়া এখন সমগ্র পশ্চিমা সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে। ন্যাটো প্রায়ই দাবি করে, তাদের অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করেই ইউক্রেন এখন যুদ্ধে সফলতা পাচ্ছে।