কাতাদাহ ইবনে নুমান (রা.) রাসুল (সা.)-এর একজন মর্যাদাবান বদরি সাহাবি। তীর চালনায় দক্ষদের একজন। প্রসিদ্ধ সাহাবি আবু সায়িদ আল-খুদরি (রা.)-এর বৈপিত্রেয় ভাই। (অর্থাৎ উভয়ের মা এক, পিতা ভিন্ন।
রিফাআহ ইবনে জায়েদ (রা.) তাঁর আপন চাচা। বনু উবাইরিকের চুরির ঘটনায় রাসুল (সা.)-এর দরবারে এই চাচা-ভাতিজা বাদী হয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে। (আত-তাবাকাতুল কুবরা, ৩/৩৪৫, ৩৪৬)
কাতাদাহ ইবনে নুমান (রা.) আকাবার শেষ বাইআতে অংশগ্রহণ করেছেন কি না, তা নিয়ে মতভেদ আছে। তবে বদর ও উহুদ যুদ্ধে তিনি শরিক ছিলেন—এতে কারো দ্বিমত নেই। বদর, উহুদ, খন্দকসহ সকল যুদ্ধে শরিক ছিলেন। মক্কা বিজয় অভিযানে ‘বনু জাফর’ গোত্রের পতাকা তাঁর হাতে ছিল। (আত-তাবাকাতুল কুবরা, ৩/৩৪৫-৩৪৬; সিয়ারু আলামিন নুবালা ৪/১২)
উহুদ যুদ্ধে প্রতিপক্ষের একটি তীর তাঁর চোখে বিদ্ধ হয়। ফলে গোটা চোখ স্বস্থান থেকে বেরিয়ে গালের ওপর ঝুলে পড়ে। আহত অবস্থায় চলে গেলেন রাসুল (সা.)-এর কাছে। রাসুল (সা.) নিজ হাতে তা স্বস্থানে বসিয়ে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল। এই চোখ নিয়ে তিনি জীবনের শেষ পর্যন্ত বেঁচেছিলেন এবং এই চোখটি অন্য চোখের চেয়ে বেশি সুন্দর ও জ্যোতিসম্পন্ন ছিল। (আত-তাবাকাতুল কুবরা, ৩/৩৪৫-৩৪৬; সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৪/১২)
কাতাদাহ ইবনে নুমান (রা.) থেকে সাতটি হাদিস বর্ণিত আছে। তাঁর থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন তাঁর ভাই আবু সায়িদ খুদরি (রা.); ছেলে ওমর ইবনে কাতাদাহ; মাহমুদ ইবনে লাবিদ প্রমুখ। (আল-ইসাবাহ ৫/৩১৮)। তিনি দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.)-এর খেলাফতামলে ২৩ হিজরি সনে ইন্তেকাল করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৬৫ বছর। খলিফা ওমর (রা.) তাঁর জানাজা পড়ান। কবরে রেখেছেন তাঁর ভাই আবু সায়িদ খুদরি (রা.); মুহাম্মদ ইবনে মাসলামাহ (রা.) ও হারেস ইবনে খাজামাহ (রা.)। (আত-তাবাকাতুল কুবরা, ৩/৩৪৬; মুখতাসার তারিখে দিমাশক ২১/৭৩)