Friday, April 19, 2024
spot_img
Homeধর্মমেহমানদারি ঈমান থাকার আলামত

মেহমানদারি ঈমান থাকার আলামত

ইসলামে মেহমানদারির গুরুত্ব অপরিসীম। এটি নবীদের সুন্নত এবং সর্বোত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশও। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে ইবরাহিম (আ.)-এর মেহমানদারির ঘটনা অত্যন্ত চমৎকার ভঙ্গিতে আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমার কাছে কি ইবরাহিমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে? যখন তারা তার কাছে এলো এবং বলল, ‘সালাম’, জবাবে সেও বলল, ‘সালাম’, এরা তো অপরিচিত লোক।

অতঃপর সে দ্রুত চুপিসারে নিজ পরিবারবর্গের কাছে গেল এবং একটি মোটা-তাজা গো-বাছুর (ভাজা) নিয়ে এলো। অতঃপর সে তা তাদের সামনে পেশ করল এবং বলল, ‘তোমরা কি খাবে না?’ (সুরা : জারিয়াত, আয়াত : ২৪-২৭)

অনুরূপ লুত (আ.)-এর মেহমানদের নিয়ে অস্থিরতা ও ব্যাকুলতার চিত্রটি পবিত্র কোরআনে এভাবে তুলে ধরেছে, ‘তিনি বলেন : তাঁরা আমার মেহমান, তাদের (ব্যাপারে) তোমরা আমাকে অপমাণিত করো না। ’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ৬৮)

আমাদের প্রিয়নবী (সা.)-এর মেহমানদারি ছিল সবার জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নবুয়তপ্রাপ্তির আগেও তাঁর এ গুণ সর্বজনবিদিত ছিল। এমনকি অমুসলিম মুশরিকদেরও গুরুত্বের সঙ্গে মেহমানদারির ঘটনা বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। নবুয়তপ্রাপ্তির প্রারম্ভিক যুগে খাদিজা (রা.) প্রিয় নবী (সা.)-কে এ বলে সান্ত্বনা দেওয়ার বর্ণনা রয়েছে যে ‘আল্লাহর কসম! কস্মিনকালেও আল্লাহ তাআলা আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক দৃঢ় রাখেন, অসহায়দের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃসদের রোজগারের ব্যবস্থা করেন এবং মেহমানদের যথাযথ মেহমানদারি করেন। …’ (বুখারি : হাদিস : ৩)

মেহমানদারির গুরুত্ব ও ফজিলত

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস পোষণ করে থাকে সে যেন মেহমানের যথাযথ সম্মান করে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬০১৮)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মেহমানদারি করে না তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। ’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৭৪১৯)

অন্য একটি হাদিসে এসেছে যে ‘মেহমান বাড়িতে আল্লাহর তরফ থেকে বরকতময় রিজিক নিয়েই আগমন করে, আর সে প্রস্থান করে এমন অবস্থায় যে মেজবানের ঘরবাসীর গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। ’ (মারিফাতুস সাহাবা : ২/৬৪৫)

মেহমানদারির বিধান

আবু বকর ইবনুল আরবি (রহ.) লিখেন, মেহমানদারি হলো ফরজে কেফায়া। আর কোনো কোনো আলেম বলেন, যেখানে কোনো খাবারদাবার ও আশ্রয়ের স্বাভাবিক ব্যবস্থা নেই সেই এলাকায় মেহমানদারি ওয়াজিব, আর যেখানে এগুলোর স্বাভাবিক ব্যবস্থা আছে সেখানে মেহমানদারি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। (তাফসিরে কুরতুবি : ৯/৬৫)

তবে এ বিধান তিন দিন পর্যন্ত প্রযোজ্য। এরপর মেহমানদারি নফলের অন্তর্ভুক্ত। হাদিসে এসেছে, ‘মেহমানের পুরস্কার এক দিন ও এক রাত। অতিথি আপ্যায়ন হলো তিন দিন; এর বেশি হলে তা হবে সদকা। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৭৪৮)

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments