Thursday, April 18, 2024
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকমিয়ানমারে উচ্চ পর্যায়ের দু’ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড অত্যাসন্ন

মিয়ানমারে উচ্চ পর্যায়ের দু’ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড অত্যাসন্ন

মিয়ানমারে উচ্চ পর্যায়ের দু’জন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড অত্যাসন্ন। তারা হলেন গণতন্ত্রপন্থি নেতা ও সাবেক এমপি কাইওয়া মিন ইউ এবং হিপ-হপ আর্টিস্ট ফাইও জেয়া থাওয়া। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের নির্দেশে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাইওয়া মিন ইউ নিজের নামের চেয়ে জিমি নামে বেশি পরিচিত। ১৯৮৮ সালের পর মিয়ানমারে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থায় এই প্রথম এ দু’জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে চলেছে। তবে সেনাবাহিনী বলেনি যে, তাদেরকে কখন ফাঁসি দেয়া হবে। তবে মিয়ানমারজুড়ে আলোচনা, জল্পনা আছে যে, অবিলম্বেই তাদের ফাঁসি কার্যকর হতে পারে। পরিকল্পিত এই মৃত্যুদণ্ডের কড়া নিন্দা জানানো হয়েছে দেশের বাইরে থেকে। জাতিসংঘের দু’জন বিশেষজ্ঞ জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের এটা একটা চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন।

গত জানুয়ারিতে রুদ্ধদ্বার বিচার প্রক্রিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সন্ত্রাসের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া অভিযোগ করা হয় যে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিলিশিয়াদের তারা সহায়তা করছেন। উল্লেখ্য, গত বছর ১লা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেখানে বিরোধীরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত এক দমনপীড়ন শুরু হয়।  

কাইওয়া মিন ইউ’র স্ত্রী নিলার থেইন অজ্ঞাত স্থান থেকে রয়টার্সকে বলেছেন, এর আগের সামরিক স্বৈরাচারের অধীনে তার স্বামী ১৮ বছর রাজনৈতিক বন্দি ছিলেন। কিন্তু তাকে আটক রাখা ব্যক্তিদের সহায়তা না করার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি। কোনোকিছুর বিনিময়ে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করেননি। তিনি তার অবস্থানে স্থির থাকবেন। স্বামী সম্পর্কে নিলার থেইন বলেন, কো জিমি আমাদের অন্তরে চিরদিন বেঁচে থাকবেন। 
উল্লেখ্য, কাইওয়া মিন ইউ (৫৩) এবং ফাইও জেয়া থাওয়া (৪১) হলেন ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সুচির অনুসারী। এ মাসের শুরুর দিকে তারা মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। কিন্তু তাতে হেরে যান। এই মৃত্যুদণ্ডের কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স সহ বিদেশি বেশ কিছু দেশ ও অধিকার বিষয়ক গ্রুপ। মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ক পরিস্থিতি সম্পর্কিত জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর টম অ্যানড্রুজ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও খেয়ালখুশি মতো মৃত্যুদণ্ড বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর মরিস টিডবল-বিনজ এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, মিয়ামনারের জনতার বিরুদ্ধে প্রায়দিনই ব্যাপকভাবে ভয়াবহ ও পর্যায়ক্রমিক হামলা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, এটা তারই একটি প্রমাণ। তারা সেখানে বেসামরিক মানুষদের হত্যা করছে। 

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। তারপর থেকে মিয়ানমারে ১১৪ জন মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিষয় তারা প্রামাণ্য আকারে ধারণ করেছে। ভিন্ন মতাবলম্বীদের মধ্যে ভয়ের শিহরণ সৃষ্টির জন্য তারা সিক্রেট ট্রাইব্যুনালে এসব বিচার করছে। এ মাসে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা মিন অং হ্ললাইংয়ের কাছে একটি চিঠি লিখে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করার আর্জি জানিয়েছেন আসিয়ানের চেয়ার ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। 

জবাবে সামরিক জান্তা ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা পিছপা হবে না। তারা পশ্চিমাদের সমালোচনাকে বেপরোয়া ও বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে। বৃহস্পতিবার সামরিক জান্তার মুখপাত্র বলেছেন, এই শাস্তি যথার্থ।  

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments