পেটের সমস্যা বেশ পীড়াদায়ক। দীর্ঘমেয়াদে এই সমস্যা অব্যাহত থাকলে কিছু খেলেই অস্বস্তি বোধ হয়। মল কঠিন হয়ে যায়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান।
পেটের জটিল সমস্যায় ভুগছিলেন রীনা নামে একজন রোগী। পেটের সমস্যার কারণে তিনি মাংস, ইলিশ মাছ ছেড়েছেন অনেক আগে। শাকসবজিও খেতে পারেন না। শাক, কাঁচা ফলে ও দুধ জাতীয় খাবার খেলে পেটে বদহজম হয় ও ব্যথা করে। পেট কামড় দিয়ে পাতলা পায়খানা হয়।
রোগের এই দীর্ঘ সময়ে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছেন। গ্যাস্ট্রোএন্টারলজি বিশেষজ্ঞ তাকে বলেছেন আপনার রোগটির নাম আইবিএস। এই রোগ ভালো হয় না, নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ওষুধ খেতে হবে আর শাক, কাঁচা ফল, দুধ বা দুধজাতীয় খাবার খেতে পারবেন না।
সবজি খেতেও ডাক্তার নিষেধ করে দিয়েছেন। তাহলে তিনি খাবেনটা কি? না খেয়ে তার শরীর দুর্বল হয়ে গেছে। মল এক সময় কষা আর এক সময় পাতলা হয়। কোষ্ট একদম পরিষ্কার হয় না। বার বার টয়লেটে যেতে হয়।
মলত্যাগের সমস্যার জন্য অবশেষে তিনি একজন কোলোরেক্টাল সার্জনের শরণাপন্ন হলেন। তিনি পরীক্ষা করে দেখলেন তার পায়ুপথ একদম সরু হয়ে গেছে। সার্জন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মিসেস সুমনাকে বললেন, আপনার পেটে এসব সমস্যা অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক, আইবিএস যাই বলুন এর মূল হচ্ছে পায়ুপথ। এ জন্য আপনার মল ক্লিয়ার হয় না।
ফলে সেটা অন্ত্রে জমে অর্থাৎ খাবারের যে পথ সেটির মধ্যে পরিবর্তন এসে যাচ্ছে। এ জন্য আপনার কোনো কিছু হজম হয় না। একেকবার একেক ধরনের টয়লেট হচ্ছে। ডাক্তার আরও জানালেন, আপনার পায়ুপথের একটি অপারেশন করতে হবে।
এই অপারেশন করলে আপনার পায়ুপথের এবং পেটের সমস্যা দুটোই ভালো হয়ে যাবে। ভয় নেই আমরা এটি বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে করি কাটাছেঁড়া ছাড়াই।
রোগী প্রথমে বিশ্বাস করলেন না, কারণ বড় বড় ডাক্তার বলেছেন তার আইবিএস হয়েছে যেটি কখনও ভালো হওয়ার নয়। এখন এ ডাক্তার বলেছেন ভালো হয়ে যাবেন!
অনন্যোপায় হয়ে তিনি অপারেশন করাতে রাজি হলেন। ক্রমান্বয়ে তার মলত্যাগ স্বাভাবিক হয়ে এলো আর পেটের সমস্যাও ভালো হতে শুরু করল। অপারেশনের তিন মাস পরে মিসেস সুমনা পুরোপুরি সুস্থ। যাদের এরূপ পেটের সমস্যা আছে তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই।