Thursday, March 28, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামবেপরোয়া ছাত্রলীগ

বেপরোয়া ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগ সংবাদের শিরোনাম হয়েই চলেছে। গতকাল আমরা ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নৈরাজ্য নিয়ে সম্পাদকীয় লিখেছি। আজ লিখতে হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নিয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে-ছাত্রলীগ যে এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, এর কি কোনো ব্যাখ্যা আছে? ছাত্রদলের একটি গ্রুপ উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এটা তারা নিতেই পারেন।

কিন্তু ছাত্রদলের এই সিদ্ধান্ত জানার পরপরই শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। পাশাপাশি তারা ছাত্রদলকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। মঙ্গলবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হন।

বেধড়ক পিটুনিতে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের কেন এই আক্রমণ? ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এ হামলার ঘটনাকে ছাত্রদলের অন্তর্দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করেছেন। এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণের ছবি পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কারা কাদের পেটাচ্ছেন, এসব ছবি থেকে তা স্পষ্ট।

বস্তুত বিএনপি অথবা ছাত্রদলের সভা-সমাবেশে হামলা করা ছাত্রলীগ কর্মীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ প্রবণতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এ দেশে রাজনৈতিক দল বা ছাত্র সংগঠনের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে।

ছাত্রলীগ যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একেচেটিয়া রাজত্ব কায়েম করতে চায়, তাহলে তা হবে গণতন্ত্র ও সংবিধানবিরোধী কাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিকভাবে নিজ নিজ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন সেই দলের সহযোগী সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একক রাজত্ব কায়েম করতে চায়।

এ প্রসঙ্গে আমরা ছাত্র সংগঠনের পেরেন্ট সংগঠনের নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান রাখতে চাই, তারা যেন তাদের সহযোগী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংযত ও শান্তিপ্রিয় হিসাবে গড়ে তোলার প্রয়াস নেন। ক্ষমতায় থাকা কিংবা ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজকে লাঠিয়াল হিসাবে ব্যবহার করা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আরেকটি বিষয় না বললেই নয়। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নিশ্চয়ই বাংলাদেশেরই একটি ভূখণ্ড।

এ এলাকায় বেআইনি কোনো কাজ হয়ে থাকলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আইনের শাসন থাকবে না, যে যার মতো প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে-এই অপসংস্কৃতি রোধে সেখানেও আইনের শাসন বলবৎ করতে হবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments