হংকংয়ে নির্বাচন
হংকংয়ের নির্বাচনে বেইজিংপন্থিদের জয়জয়কার। রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমনপীড়নের পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রেকর্ড সর্বনিম্ন ভোটে এ নির্বাচন হয়েছে। এতে শুধু ‘দেশপ্রেমিক’রা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ভোট দিতে পেরেছেন। ফলে বেইজিংয়ের চাপিয়ে দেয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালু হওয়ার পর প্রথম অনুষ্ঠিত লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের প্রায় প্রতিটি আসনে বেইজিংপন্থি প্রার্থীরা দখল নেবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান। জাতীয় নিরাপত্তা আইনের নামে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দেড় বছর ধরে ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনকে পর্যবেক্ষকরা ওই শহরে রাজনৈতিক বর্ণবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হংকংয়ে নির্বাচনে বৈধ ভোটারের সংখ্যা ৪৪ লাখ।তার মধ্যে এই নির্বাচনে শতকরা মাত্র ৩০ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছেন। ২০১৬ সালে এর আগের নির্বাচন হয়েছিল। তখন যে হারে মানুষ ভোট দিয়েছিল, এবারে তার অর্ধেক মানুষ ভোট দিয়েছে। বেইজিংপন্থি প্রার্থীরা ভোটের দিন অধিক পরিমাণ ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। তা সত্ত্বেও ভোটের সর্বনিম্ন রেকর্ড গড়লো হংকং।
স্বঘোষিত মধ্যপন্থি দল থার্ড সাইড পার্টির টিক চিন-ইউয়েন’ই একমাত্র প্রার্থী হতে যাচ্ছেন, যিনি চীনপন্থি না হয়েও নির্বাচিত হচ্ছেন। ২০১৫ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টি ত্যাগ করে তিনি নিজে এই দল গঠন করেন। তিনি দাবি করেছেন, বেইজিং চাপিয়ে দিয়েছে নিরাপত্তা আইন। এই আইন বাস্তবায়নে বেসামরিক এবং জেলা কাউন্সিলরদের ওপর তা চাপিয়ে দিয়ে সরকারের প্রতি আনুগত্যের বাধ্যতামূলক শপথ থেকে সমাজকর্মীদের বাদ দেয়া উচিত। তিনি চীন সমর্থিত মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজেকে উদার এবং যৌক্তিক প্রার্থী হিসেবে বর্ণনা করেন।
এর বাইরে উদার এবং চীনপন্থি নন এমন প্রার্থীরা বেইজিংপন্থি প্রার্থীদের কাছে ২০ আসনে পরাজিত হয়েছেন। এর মধ্যে আছেন গণতন্ত্রপন্থি শিবিরের ম্যান্ডি টাম এবং ফ্রেডেরিক ফাং। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ফাং বলেছেন, জনগণকে ভোট দিতে নেয়া খুব সহজ কাজ নয়। আমার মনে হয়, তারা বর্তমান প্রেক্ষাপটে তেমন কোনো ভিন্নতা আসবে বলে মনে করছেন না।
ডিএবি এবং ফেডারেশন ফর ট্রেড ইউনিয়ন ১৩ জন প্রার্থী দিয়েছিল। তারাই বেইজিংপন্থি সবচেয়ে বড় গ্রুপ। তাদের সব প্রার্থীই বিজয়ী হয়েছেন। উল্লেখ্য, হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম’কে ক্ষমতায় রেখেছে বেইজিং। তিনি বলেছেন, হংকংয়ের গভীর সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন লেজিসলেটিভের সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষায় আছেন তিনি।