Friday, April 19, 2024
spot_img
Homeধর্মবিয়ে যেভাবে পূর্ণ মুমিন হতে সাহায্য করে

বিয়ে যেভাবে পূর্ণ মুমিন হতে সাহায্য করে

পাপমুক্ত জীবন মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাই ইসলামে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বিয়েকে দ্বিনের অর্ধেক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মূলত মানুষ অপরাধে সম্পৃক্ত হয় লজ্জাস্থান, মুখের কথা ও উদরের কারণে। আর একজন পুণ্যবতী নারীকে সহধর্মিণী হিসেবে পেলে ব্যক্তির অপরাধের সুযোগ কমে যায়। ইসলাম সামর্থ্যবান যুবকদের বিয়েতে উৎসাহিত করে। রাসুল (সা.) আমাদের বলেছিলেন, হে যুবক সম্প্র্রদায়, তোমাদের কেউ সামর্থ্যবান হলে সে যেন বিয়ে করে। কেননা তা দৃষ্টি সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান রক্ষা করে। আর কেউ তা না পারলে সে যেন রোজা রাখে। কেননা তা তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০৬৫)

মানসিক প্রশান্তি : বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর আরেকটি নিদর্শন হলো, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যেন তাদের কাছে তোমরা প্রশান্তি অনুভব করো। তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সহমর্মিতা তৈরি করেছেন, নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল জাতির জন্য বহু নিদর্শন আছে।’ (সুরা : রোম, আয়াত : ২১)

দ্বিনের পালনে পূর্ণতা আনে : আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, পুণ্যবতী নারীকে স্ত্রী হিসেবে পেলে আল্লাহ তাআলা যেন তাকে দ্বিনের একটি অংশ পালনে সহায়তা করল। অতঃপর সে যেন বাকিটুকু পালনের চেষ্টা করে। (সুনানে বাইহাকি, হাদিস : ৫৪৮৬)

সচ্ছলতা বাড়ায় : মহান আল্লাহ বিয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বিয়ের পর ব্যক্তির সামনে বহুমুখী সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা বিয়েহীন, তাদের বিয়ে দাও এবং তোমাদের সৎকর্মশীল দাস-দাসীদেরও, তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করবেন, আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩২)

আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বলেন, তোমরা বিয়ের মাধ্যমে প্রাচুর্যের অনুসন্ধান কোরো। (জামিউত তাবিল : ১৭/২৭৫)

আল্লাহর দায়িত্ব গ্রহণ : আল্লাহর নির্দেশ পালনকারীদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা থাকে। তিনি তাদের সব দুঃখ-কষ্ট দূর করেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা মহান আল্লাহর কর্তব্য। প্রথমজন হলেন আল্লাহর পথে জিহাদকারী। অতঃপর মুক্তিপণ আদায়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ দাস এবং যে পবিত্র জীবনের লক্ষ্যে বিয়ে করে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৬৫৫)

পার্থিব সাফল্যের মাপকাঠি : সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আদম সন্তানের সাফল্যের কারণ তিনটি : সতীসাধ্বী নারী, উপযুক্ত বাসস্থান ও উপযুক্ত বাহন। আদম সন্তানের দুর্ভাগ্যের কারণও  তিনটি : মন্দ নারী, অনুপযুক্ত বাসস্থান ও অনুপযুক্ত বাহন। (মুসনাদে আহমাদ : ১/১৬৮)

জান্নাতের নিশ্চয়তা : লজ্জাস্থান ও মুখের কারণে বেশির ভাগ পাপাচার সংঘটিত হয়। আর দুটির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে জান্নাতও সুনিশ্চিত। রাসুল (সা.) বলেন, যে আমাকে দুই ঊরু ও দুই চিবুকের মধ্যভাগের নিশ্চয়তা দেবে, আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১০৯)

তাই সমাজের অপরাধ নির্মূল করতে বিবাহযোগ্য যুবক-যুবতীদের বিয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা চাই। নিজেদের পার্থিব উন্নতির পেছনে জীবনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করে পাপাচার ও ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। তাই উন্নত চরিত্রের অধিকারী পরিশ্রমী ও মেধাবী তরুণ-যুবকদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতে বিলম্ব করা মোটেও উচিত নয়। কেননা পবিত্র জীবন গঠনের উদ্দেশ্যে কেউ বিয়ে করলে আল্লাহ তাকে প্রাচুর্যের অধিকারী করবেন। আল্লাহ আমাদের সফলকাম করুন। আমিন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments