আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন কোরাইশ বংশের সন্তান। কুরাইশ ছিল আরবের সর্বোচ্চ বংশ। তার অনেক শাখা-প্রশাখা ছিল। তার মধ্যে হাশেম সবার শীর্ষে। আর সেই বংশের সন্তান ছিলেন আমাদের নবীজি (সা.)। বংশীয় আভিজাত্যে তিনি ছিলেন সবার ঊর্ধ্বে। মহানবী (সা.) এক হাদিসে বলেন, ‘আমি বংশীয় মর্যাদায় তোমাদের সবার তুলনায় শ্রেষ্ঠ। আমার পূর্বপুরুষের মধ্যে বাবা আদম (আ.) থেকে এই পর্যন্ত কেউ জিনা করেননি। সবাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
ইসলাম গ্রহণের আগে আবু সুফিয়ানকে যখন রোমান সম্রাট হিরাক্লিয়াস জিজ্ঞাসা করল, বংশীয়ভাবে তিনি কেমন? আবু সুফিয়ান রাসুল (সা.)-এর পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘মুহাম্মদ আমাদের মধ্যে উচ্চ বংশীয় একজন ব্যক্তি।’ রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস তখন বলেছিলেন, ‘নবী-রাসুলরা সর্বোচ্চ বংশ ও গোত্রেই প্রেরিত হয়ে থাকেন।’ (বুখারি)
রাসুল (সা.) নিজেও বলেছেন, ‘আমি বনি আদমের সর্বোত্তম বংশে প্রেরিত হয়েছি। আমার যুগই সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ।’ (বুখারি : ৪/১৫১)
অন্য হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ কিনানা গোত্র থেকে কুরাইশকে নির্বাচন করেছেন, আর কুরাইশদের ভেতর থেকে বনু হাশিমকে নির্বাচন করেছেন। আর বনু হাশিম থেকে আমাকে নির্বাচন করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ২২৭৬; তিরমিজি, হাদিস : ৩৬০৬)
আর এক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে আরবরা, আর সর্বোত্তম আরব হচ্ছে কুরাইশরা, আর সর্বোত্তম কুরাইশ বংশীয় লোক হচ্ছে বনু হাশেম।’ (দায়লামি : আল ফেরদৌস, ২:১৭৮, হাদিস ২৮৯২)
আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) মিম্বরে উঠে বলেন, আমি কে? তখন সাহাবিরা বলেন, আপনি আল্লাহর রাসুল। তখন রাসুল (সা.) বলেন, আমি মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব। আল্লাহ সৃষ্টজীব সৃষ্টি করত আমাকে তাদের ভালোদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অতঃপর তাদের দুই ভাগে ভাগ করেছেন (তথা আরব ও আজম) এবং আমাকে শ্রেষ্ঠ ভাগের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অতঃপর তাদের বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত করেছেন এবং আমাকে শ্রেষ্ঠ গোত্রে স্থান দিয়েছেন। অতঃপর তাদের বিভিন্ন বাড়িতে পৃথক করেছেন এবং আমাকে শ্রেষ্ঠ বাড়িতে স্থান দিয়েছেন। অতএব, আমি তাদের মধ্যে বাড়ির দিক দিয়েও শ্রেষ্ঠ এবং ব্যক্তির দিক দিয়েও শ্রেষ্ঠ। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৩২)
লেখক : মুদাররিস জিয়াউল উলুম মাদরাসা, সাভার, ঢাকা