সোমবার রাতে জেরুজালেমের পশ্চিমে আরব গ্রাম এইন নাকুবাতে ৫০ বছর বয়সী এক নারীকে অসাড় অবস্থায় উঠানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ইহুদি ও মুসলিম ইউনাইটেড হাটজালাহ ইএমটি স্বেচ্ছাসেবকরা ওই নারীকে উদ্ধার ও সুস্থ করে তোলার জন্য একসঙ্গে কাজ শুরু করেন।
ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম ইএমটি স্বেচ্ছাসেবক সামর সালামা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি সঙ্গে থাকা ডিফিব্রিলেটরটি ওই নারীর সঙ্গে সংযুক্ত করেন এবং বুকে চাপ দেন। ওই সময় সেই নারীর নাড়ির স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না।
শিগগিরই ইহুদি স্বেচ্ছাসেবক ডভি বাশ ওখানে পৌঁছান। তিনি ঘটনার সময় সিনাগগে ছিলেন এবং খুব তাড়াতাড়ি সাহায্য করতে ছুটে যান। ওই নারীর হৃৎস্পন্দন প্রায় ১০ মিনিটের জন্য একটি ডিফিব্রিলেটর দ্বারা শনাক্ত করা যায়নি। তখন স্বেচ্ছাসেবীরা কম্প্রেশন সঞ্চালন এবং ভেন্টিলেশন শুরু করে।
এর পর একটি নিবিড় পরিচর্যার অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং রোগীকে ইন্ট্রাভেনাস থেরাপির মাধ্যমে ওষুধ এবং তরল দেওয়া হয়। হার্ট মনিটর দেখায় যে রোগীর নাড়ি ‘১৪০ বিপিএম ছন্দে ফিরেছে’। তখন তাঁকে আরো যত্নের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ডভি বাশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলের অসাধারণ টিমওয়ার্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি সর্বদা সন্তুষ্ট যে আমি একজন ইউনাইটেড হাটজালাহ স্বেচ্ছাসেবক। আমরা যে রোগীদের চিকিৎসা করি, তারা বিভিন্ন জাতি এবং ধর্ম থেকে আসে এবং আমরা কোনো বৈষম্য ছাড়াই একটি দল হিসেবে একসঙ্গে কাজ করি। একটি জীবন বাঁচানোর পর রাতে বাড়ি ফিরে সব সময়ই ভালো লাগে।
অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে সালামা বলেন, এটি ছিল আমার দেখা সবচেয়ে কঠিনভাবে জীবনে ফিরে আসার একটি অধ্যায়। কিন্তু আমি খুশি যে এটি সুচারুভাবে হয়েছে এবং তিনি ভালো আছেন। আমার সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য আমি সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানাইঅ
প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে কিছু সদস্য ওই নারীকে বাঁচানোর আশা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছিলেন। তবে তাঁকে বাঁচাতে পারবে বলে দলটি উত্তেজিত ছিল। এবং তারা একটি অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করে।
গত জুলাইয়ে ইহুদি ও মুসলিম ইএমটিরা একইভাবে জেরুজালেমের পিসগাট জিভে একজন নারীর জীবন বাঁচাতে একত্রিত হয়। ঘটনাস্থলে থাকা একজন স্বেচ্ছাসেবক বলেন, আমি প্রয়োজনে সবাইকে সাহায্য করি, তা সে যেই হোক না কেন।
অক্টোবরে ইউনাইটেড হাটজালাহ তার মেয়ে ইউনিটের জন্য একটি প্রশিক্ষণ অনুশীলনের আয়োজন করে যেখানে ১৫০ জন ইহুদি ও মুসলিম স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেয়।
শেষ কথা হলো, এই ইহুদি ও মুসলিম স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে জাতি বা ধর্ম বড় নয়। তারা জীবন বাঁচাতে একত্রিত হন।
সূত্র : দ্য জেরুজালেম পোস্ট