Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeজাতীয়বাংলাদেশ অচিন্তনীয় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি: বিশ্বব্যাংক এমডি

বাংলাদেশ অচিন্তনীয় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি: বিশ্বব্যাংক এমডি

বাংলাদেশ  বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই অচিন্তনীয় বৈশ্বিক  চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংক এমডি অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ। একইসঙ্গে আগামী ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হতে বাংলাদেশকে ৫টি অর্থনৈতিক সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া করোনা মহামারি ও ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট জটিলতার চ্যালেঞ্জগুলো নিরসনে বাংলাদেশকে সহায়তায় বিশ^ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।  বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারিত্বের ৫০ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আর্থিকখাতে কাঠামোগত সংস্কার, ভ্যাট ব্যবস্থা এবং কর ব্যবস্থার সংস্কার, রপ্তানি আয় বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণ, অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন নিশ্চিত এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থাটির এমডি অ্যাক্সেল ভ্যান। তিনি বলেন, উন্নত দেশের কাতারে যেতে সবধরনের পদক্ষেপে সহযোগিতা করবে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের আরেক প্রতিষ্ঠান মেগা থেকে অর্থায়ন গ্যারান্টি দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। এ ছাড়া টেকসই অর্থনীতি নিশ্চিতে বেসরকারি খাতে নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে অ্যাক্সেল ভ্যান আরও বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বকে দেখিয়েছে সফল উদ্ভাবনের মাধ্যমে অতিদ্রুত কীভাবে দারিদ্র্য দূর করা যায়, মানুষের উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু অভিযোজনে কীভাবে সফল হতে হয়। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে তার ৫০ বছরের অংশীদারিত্ব এবং দেশটির উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন যাত্রার অংশ হতে পেরে গর্বিত।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে। যার বেশির ভাগই অনুদান বা স্বল্পসুদের ঋণ।

বর্তমানে দেশে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশনের (আইডিএ) সবচেয়ে বড় কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ। বাংলাদেশে শিক্ষায় বিনিয়োগে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। শিক্ষা সব দেশের উন্নয়নের চাবি। ভোকেশনাল, প্রাইমারি, সেকেন্ডারি শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার বিতরণ ও উপবৃত্তি কর্মসূচি নিতে হবে। 
বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জলবায়ু মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক কাজ করবে বলে জানান অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ। তিনি বলেন, উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বিশ্বব্যাংক। তবে বাংলাদেশকে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম জলবায়ু পরিবর্তন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও দারিদ্র্য।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন অন্যতম সমস্যা। বিশেষ করে হাওর ও উপকূল এলাকায় বেশি। এসব এলাকায় বড় বিনিয়োগ দরকার। বছরে প্রবৃদ্ধির আড়াই থেকে তিন শতাংশ দরকার বিনিয়োগ। জলবায়ুর কারণে ক্লাইমেট রিফুজি সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে হবে। ডেল্টাপ্ল্যান কিছুটা হলেও বিনিয়োগের কিছু এলাকা ঠিক করে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজারের সঞ্চালনায় প্যানেল ডিসকাশনে আরও অংশ নেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউস।
এদিকে আইসিটি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ‘সেলিব্রেটিং ফিফটি ইয়ার্স অব বাংলাদেশ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড ব্যাংক পার্টনারশিপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি ও স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন বিশ্বব্যাংকের এমডি। এ সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতির প্রশংসা করেন অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ। আগামীতেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বিকাশে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার, উল্লেখ করে অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, অতীতের মতোই বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তুলে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। তিনি স্টার্টআপের বিকাশে সরকারের নানা উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং তরুণদের মেধাকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পরে অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে সফলভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর এবার আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: আইসিটি ২০৪১ মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়ন করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা কামনা করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments