পাপমুক্ত জীবনের ক্ষেত্রে ফেরেশতারা মানুষের চেয়ে এগিয়ে। তবে জ্ঞানের প্রশ্নে তাঁরা পিছিয়ে। আল্লাহ মানুষের জ্ঞান পরিধি যতটা বিস্তৃত করেছেন, ফেরেশতাদের জ্ঞানের পরিধি তত বড় নয়। আল্লাহ তাঁদের ততটুকুই জ্ঞান দান করেছেন, দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁদের যতটা প্রয়োজন।
মানুষের জ্ঞানগত শ্রেষ্ঠত্ব ও ফেরেশতাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তিনি আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন। অতঃপর সে সমুদয় ফেরেশতাদের সম্মুখে প্রকাশ করলেন এবং বললেন, এই সমুদয়ের নাম আমাকে বলে দাও। যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তারা বলল, আপনি মহান, পবিত্র। আপনি আমাদের যা শিক্ষা দিয়েছেন তা ছাড়া আমাদের তো কোনো জ্ঞানই নেই। বস্তুত আপনি জ্ঞানময় ও প্রজ্ঞাময়। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৩১-৩২)
তবে আল্লাহ দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ফেরেশতাদের দিয়েছেন। যেন তাদের দায়িত্ব পালনে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়। যেমন মানুষের আমল লিপিবদ্ধকারী দুই ফেরেশতা মানুষের সব ধরনের আমল সম্পর্কে অবগত। আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই আছে তোমাদের জন্য তত্ত্বাবধায়করা। সম্মানিত লিপিকরবৃন্দ। তারা জানে যা তোমরা করো। ’ (সুরা ইনফিতার, আয়াত : ১০-১২)
একইভাবে মৃত্যুর ফেরেশতা মানুষের জীবনকাল সম্পর্কে অবগত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলো, তোমাদের জন্য নিযুক্ত মৃত্যুর ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অবশেষে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে প্রত্যানীত হবে। ’ (সুরা সাজদা, আয়াত : ১১)
জ্ঞানের বাহক হিসেবেও ফেরেশতারা কখনো কখনো জ্ঞানের অধিকারী হয়েছিলেন। যেমন জিবরাইল (আ.) আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহির জ্ঞান নবী-রাসুলদের কাছে পৌঁছে দিতেন। তাঁদেরকে তিনি আল্লাহর বাণী শেখাতেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এটা (কোরআন) তো ওহি, যা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ হয়, তাঁকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী প্রজ্ঞাসম্পন্ন ফেরেশতা। ’ (সুরা নাজম, আয়াত : ৪-৬)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই এই কোরআন সম্মানিত বার্তাবাহকের আনীত বাণী। যে সামর্থ্যশালী, আরশের মালিকের কাছে মর্যাদাসম্পন্ন। যাকে সেখানে মান্য করা হয়, যে বিশ্বাসভাজন। ’ (সুরা তাকভির, আয়াত : ২১)