Saturday, April 20, 2024
spot_img
Homeধর্মপৃথিবীর প্রাচীনতম মৌমাছি পালনকেন্দ্র যেখানে

পৃথিবীর প্রাচীনতম মৌমাছি পালনকেন্দ্র যেখানে

মরক্কোর সোস-মাসা অঞ্চলে অবস্থিত ‘ইনজার্কি এপিয়ারি’কে মনে করা হয় পৃথিবীর সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ সম্মিলিত মৌমাছি পালনকেন্দ্র। মরক্কোর উপকূলীয় শহর আগাদির থেকে ৮২ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এটি মরক্কোর জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর একটি। প্রায় এক হাজার মিটার দীর্ঘ মৌমাছি পালনকেন্দ্রটি কাদা, কাঠ, পাম ও বিনুনিযুক্ত নলখাগড়া দিয়ে তৈরি। ১৮৫০ সালে নির্মাণের পর কেন্দ্রটি বেশ কয়েকবার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। মৌমাছি চাষ অত্র অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী পেশা। এই অঞ্চলের লোক বংশপরম্পরায় এই কাজ শেখে ও করে। ইনজার্কি মৌমাছি পালনকেন্দ্রের আশপাশে মাত্র কয়েক শ মানুষ বসবাস করে। তাদের বেশির ভাগই মৌচাষি। সাধারণত মার্চ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মধুচাষ করা হয়।

ধারণা করা হয়, উত্তর আগাদিরে বারবার উপজাতিরা খ্রিস্টীয় ১৬ শতকের আগেই মৌমাছি পালন শুরু করে। পরবর্তী সময়ে তাদের হাতেই ‘ইনজার্কি এপিয়ারি’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মৌমাছি পালনকেন্দ্রটি যৌথ মালিকানাধীন। এখানে দুই শ ৫০টি হোল্ডার (ছোট কক্ষবিশেষ) আছে। প্রতিটি হোল্ডারে ১৫ থেকে ২০টি মৌচাক থাকে। কমপক্ষে তিন হাজার সাত শ মৌচাকে হাজার হাজার মৌমাছি আশ্রয় গ্রহণ করে। এখানে মূলত উত্তর আফ্রিকান হলুদ মৌমাছিরই চাষ হয়। মৌমাছি পালনকেন্দ্রটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯৮০ মিটার ওপরে অবস্থিত। সামষ্টিক শষ্যভাণ্ডারের মতো এই যৌথমালিকানাধীন মৌমাছি পালনকেন্দ্র পরিচালনা করা হয়।

মৌমাছি পরাগায়ণের মাধ্যমে এলাকার সমৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। যার মধ্যে আছে আরগান, জুনিপার, হোলম ওক, বাবলা, ল্যাভেন্ডার, থাইম, বাদাম, ক্যাকটাস, কমলা, ফুলসহ নানা ধরনের ঔষধি গাছ। মৌমাছি পালন করার কারণে কৃষকরা উন্নতমানের মধু ও থাইম সংগ্রহের সুযোগ দেয়। মরক্কোয় মৌমাছির খামারগুলো সাধারণত আরগান বাগানের পাশে গড়ে ওঠে। দেশটিতে আরগানগাছের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে। বিশেষত আমাজিগ উপজাতিদের জীবন-জীবিকা আরগান চাষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।

১৯৯০ ও ১৯৯৬ সালের ভয়াবহ বন্যায় ইনজার্কি এপিয়ারি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৬ সালে ইউএসএইড ও ইউনেসকোর সহযোগিতায় তা পুনর্নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া মরক্কো সরকারের ‘গ্রিন মরক্কো প্ল্যান’ কর্মসূচির অধীনে নিয়মিত সহযোগিতা লাভ করে ইনজার্কি মৌমাছি পালনকেন্দ্র।

তথ্যসূত্র : মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ ও স্লোফুড ডটকম

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments