ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে ভিয়েনায় বৈঠক অব্যাহত থাকলেও পাশ্চাত্য বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এখনো গ্রহণযোগ্য সমঝোতার ব্যাপারে রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত দু’দিন ধরে চার যোগ এক গ্রুপের সঙ্গে ইরানের যৌথ বৈঠকের পাশাপাশি ইরানের প্রধান পরমাণু আলোচক আলী বাকেরি কানির সাথে রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সাথে আলাদা আলাভাবেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এসব বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলছে। ভিয়েনায় বিরামহীন আলোচনা থেকে বোঝা যায় সংলাপ এগিয়ে গেলেও বেশ কিছু বিষয়ে এখনো মতবিরোধ রয়ে গেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বহু বিষয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হলেও পাশ্চাত্যের দেশগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা এবং বাড়তি দাবি দাওয়ার কারণে সংলাপ প্রক্রিয়া ধীর গতিতে এগোচ্ছে। পাশ্চাত্য একদিকে আলোচনা অব্যাহত রাখার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধে দেয়ার কথা বলছে অন্যদিকে তারা ক্ষণে ক্ষণে নিজেদের নীতি পরিবর্তন করায় এবং বর্তমানে যেসব বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে তা উপেক্ষা করায় আলোচনা ধীর গতিতে এগোচ্ছে। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লুদ্রিয়া গত বুধবার বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া তেহরানের ওপর ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে ইরান ও বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যকার আলোচনায় অগ্রগতি হলেও চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছতে এখনো বহু সময় লাগবে।
এবারের ভিয়েনা আলোচনায় ইরান কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে তাদের পরিস্কার অবস্থান জানিয়ে দিয়ে বলেছে, ন্যায্য অধিকার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেয়া হবে না এবং প্রতিপক্ষরা যদি ইরানের দাবি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফের সমঝোতা হতে পারে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান নতুন করে সমঝোতায় পৌঁছার জন্য পাশ্চাত্যকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ভিয়েনা বৈঠকে আমরা এখনো পাশ্চাত্যের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখিনি। তাই ধারণা করা হচ্ছে দ্রুত একটি সমাধানে পৌঁছার কোনো চিন্তা পাশ্চাত্যের নেই এবং তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে গড়িমসি করছে।
এদিকে, ইহুদিবাদী ইসরাইল ভিয়েনা আলোচনাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। ইরানের সাথে কোনো সমঝোতা হলে তারা অনবরত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে সবাইকে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত আবারো ভিয়েনায় সম্ভাব্য সমঝোতার ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে যে সমঝোতাই হোক না কেন তাতে ইসরাইলের কিছুই আসে যায় না এবং তেলআবিব তা মানতে বাধ্য নয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পরমাণু সমঝোতায় পাশ্চাত্যের দেশগুলো একদিকে ইসরাইলি হুমকির বিষয়ে নীরব রয়েছে অন্যদিকে তারা পরমাণু সমঝোতাকে পুনরুজ্জীবীত করারও দাবি করছে যা থেকে আলোচনায় তাদের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
সূত্র: পার্সটুডে