Saturday, April 20, 2024
spot_img
Homeধর্মনবীজি (সা.)-এর যুগে দফের ব্যবহার

নবীজি (সা.)-এর যুগে দফের ব্যবহার

মোল্লা আলী কারি (রহ.) বলেন, দফের মধ্যে যখন বাদ্যযন্ত্রের বৈশিষ্ট্য এসে যাবে, তখন তা সর্বসম্মতিক্রমে নাজায়েজ [ মিরকাতুল মাফাতিহ : ৬/২১০ ]

অনেকে ইসলামী সংগীতে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার বৈধ করতে দফ-সংক্রান্ত হাদিসগুলো উপস্থাপন করেন। অথচ নবীজি (সা.)-এর যুগে দফের ব্যবহার অবাধ ও শর্তহীন ছিল না। হাদিসগুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় এগুলো বাদ্যযন্ত্রকে বৈধ করার জন্য যথেষ্ট নয়।

দফ ব্যবহার করা বৈধ : একাধিক হাদিস দ্বারা প্রমাণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে দফ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।

যেমন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বিয়ের ঘোষণা দেবে এবং তা মসজিদে সম্পন্ন করবে। আর এ উপলক্ষে দফ বাজাবে। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৮৯)

নবীজি (সা.)-এর সময়ে দফের ব্যবহার : গবেষক মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মুমিন দফ-সংক্রান্ত হাদিসগুলো একত্র করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত তুলে ধরেছেন। যার কয়েকটি হলো—

১. প্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারী বা পুরুষ নিজেরা গান করেননি এবং বাদ্যযন্ত্র (দফ) বাজাননি। গান করেছে বালিকা, কিশোরী ও দাসিরা। অন্যরা শুধু শুনেছে।

২. দফের অনুমতি দেওয়া হয়েছে শুধু বিয়ে ও ঈদের দিনে।

৩. যারা গান করেছিল এবং দফ বাজিয়েছিল তারা পেশাদার গায়িকা ছিল না।

৪. দফ ছাড়া অন্য কোনো বাদ্যযন্ত্রের কথা হাদিসে ইতিবাচকভাবে আসেনি। (ইসলামের দৃষ্টিতে গান-বাজনা, পৃষ্ঠা ৫৪-৫৬)

রাসুলের যুগে দফ যেমন ছিল : হাদিসের ব্যাখ্যাকার, যারা নবীজি (সা.)-এর যুগে ব্যবহৃত দফ সম্পর্কে অনুসন্ধান করেছেন, তাঁরা বলেছেন দফ হলো একপাশ খোলা ঢোলবিশেষ। বাজালে ঢ্যাব ঢ্যাব আওয়াজ হয়। প্রকৃতপক্ষে দফ সংগীতে ব্যবহৃত কোনো বাদ্যযন্ত্রের পর্যায়ে পড়ে না। আউনুল বারি গ্রন্থাকার বলেন, দফের আওয়াজ স্পষ্ট ও চিকন নয় এবং সুরেলা ও আনন্দদায়কও নয়। কোনো দফের আওয়াজ যদি চিকন ও আকর্ষণীয় হয় তখন তা আর দফ থাকবে না; বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হবে। (আউনুল বারি : ২/৩৫৭)

বাদ্যযন্ত্র হিসেবে দফের ব্যবহার : যদি কোনো ব্যক্তি দফকে বাদ্যযন্ত্রের মতো ব্যবহার করে, তবে বাদ্যযন্ত্র হিসেবেই গণ্য হবে। মোল্লা আলী কারি (রহ.) বলেন, আর দফের মধ্যে যখন বাদ্যযন্ত্রের বৈশিষ্ট্য এসে যাবে, তখন তা সর্বসম্মতিক্রমে নাজায়েজ বলে পরিগণিত হবে। (মিরকাতুল মাফাতিহ : ৬/২১০)

এ ক্ষেত্রে ফকিহদের দলিল হলো আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস। তিনি বলেন, ‘নবী (সা.) নিষেধ করেছেন, দফ, তবলা বা ঢোল বাজাতে এবং বাঁশিতে সুর তুলতে। ’ (সুনানে তাবারানি)

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments