মুখের হাসি অন্তরের পরিচ্ছন্নতার বার্তা দেয়। মন ভালো থাকলে চেহারায় ফুটে ওঠে তার সজীবতা। তাই সব সময় মুখে হাসি রাখার চেষ্টা করুন। হাসিমুখে কথা বলুন মানুষের সঙ্গে।
এতে মানসিক প্রশান্তি লাভ করবেন। শরীর ও মন দুটোই সতেজ থাকবে। বিপরীতে যারা সর্বদাই মুখ গোমরা করে রাখেন, চেহারায় কখনো হাসি ফুটে না, তাদের দিকে তাকালে বোঝা যায় যে তারা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। হাজারো দুশ্চিন্তা যেন তাদের গ্রাস করছে প্রতিনিয়ত। কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান। আপনার অতীতের সেই প্রীতিময় মূহূর্তগুলোর স্মৃতিচারণা করুন।
দেখুন, প্রিয় নবী (সা.) মাঝেমধ্যে তাঁর সাহাবিদের নিয়ে বিভিন্ন রসাত্মক গল্প করতেন। জাহেলি যুগের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতেন। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) কবিতা আবৃত্তি করতেন। রাসুল (সা.) এগুলো শুনে কখনো হাসছেন, আবার কখনো চুপ করে থাকতেন। ‘শামায়েলে তিরমিজি’সহ বিভিন্ন কিতাবে এ বিষয়ে একাধিক হাদিস বর্ণিত রয়েছে। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে কোনো দিন এরূপ মুখ খুলে হাসতে দেখিনি, যাতে তাঁর আলজিভ দেখা যায়; বরং তিনি সর্বদাই মুচকি হাসতেন। (বুখারি, হাদিস : ৬০৯২)
নবীজির মুখে সর্বদা হাসি লেগেই থাকত। জারির (রা.) বলেন, আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছি, তখন থেকে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে তাঁর কাছে প্রবেশ করতে বাধা দেননি এবং যখনই তিনি আমার চেহারার দিকে তাকাতেন তখন মুচকি হাসতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩০৩৫)
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে মাঝেমধ্যে সাথী-সঙ্গীদের সঙ্গে শরিয়ত নির্দেশিত পন্থায় হাসি-মজা করা দোষণীয় নয়। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষণীয় দিক হলো, যেন আমরা শরিয়তগর্হিত কোনো কাজে লিপ্ত না হই। যেমন—মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য অলীক মিথ্যা কথাবার্তা বলা। অরুচিকর কবিতা আবৃত্তি এবং এগুলো শুনে অট্টহাসি হাসা ইত্যাদি। কারণ অট্টহাসি দেওয়াকে ইসলাম অপছন্দ করে।
মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করলে সদকার সওয়াব পাওয়া যায়। ‘সদকা’ মানে দান, যার বিনিময়ে আল্লাহ আখিরাতে পুরস্কৃত করবেন। একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজ সদকাস্বরূপ। আর গুরুত্বপূর্ণ একটি ভালো কাজ হলো অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭০)
কাজেই মুসলমানরা একে অন্যের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করবে—এটাই স্বাভাবিক।