মেটা মালিকানাধীন ফটো শেয়ারিংয়ের জনপ্রিয় প্ল্যাটফরম ইনস্টাগ্রাম ২০২২ সালে নিজেকে নিয়ে নতুন করে ভাববে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অ্যাডাম মোসেরি। প্ল্যাটফরমটিতে সামনের বছর ‘আরও স্বচ্ছতা’ আনার কথা বললেও সাম্প্রতিক কেলেঙ্কারিগুলো নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
২০২১ সালে সংবেদনশীল কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের ওপর বেশি জোর দিয়েছে ইনস্টাগ্রাম। সরিয়ে ফেলা হয়েছে লাইক কাউন্ট। শুধু তাই নয়, কিশোর বয়সের ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তায় তাদের সরাসরি বার্তা পাঠানোর ওপর আনা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
সম্প্রতি মোসেরি টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিওতে বলেছেন, আমাদেরও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সে কারণেই ইনস্টাগ্রামের কিছু বিষয় উন্নত করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আর স্রেফ একটি ফটো-শেয়ারিং অ্যাপ নই। তাই আমরা ভিডিওর ওপর জোর দিয়ে কাজ করছি। কারণ আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ব্যবহারকারীদের কাছে রিল ফিচার আরও জনপ্রিয় করে তোলা। তা ছাড়া কীভাবে এ প্ল্যাটফরমের স্বচ্ছতা আরও বাড়ানো যায়, তাতে আমরা জোর দিয়েছি।’ কনটেন্ট নির্মাতারা যেন আরও বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন, সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। যদিও সেই ভিডিও বার্তায় চলতি বছরের কেলেঙ্কারিগুলো নিয়ে মুখ খোলেননি মোসেরি।
সাবেক কর্মীদের ফাঁস করা নথিপত্র ও অভ্যন্তরীণ গবেষণা প্রতিবেদনের কারণে নানা দিক থেকে কঠোর সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পড়েছিল ইনস্টাগ্রাম ও প্ল্যাটফরমটির মূল প্রতিষ্ঠান ‘মেটা ইনকরপোরেটেড’। ফাঁস হওয়া নথিপত্র আর গবেষণা প্রতিবেদন থেকে উঠে আসে, কিশোর বয়সিদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নিজস্ব প্ল্যাটফরমের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জানা থাকলেও মুনাফার লোভে বিষয়গুলো অগ্রাহ্য করে গেছে ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ গবেষণা ও নথি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছিল-কিশোর বয়সিদের ওপর ইনস্টাগ্রামের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে ভালোভাবেই জানত ফেসবুক।
ইনস্টাগ্রাম দাবি করে আসছে, প্রতিষ্ঠানের গবেষণাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। ইনস্টাগ্রাম যে কিশোর বয়সিদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, সেই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে গেছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২২ সালের পরিকল্পনা সম্পর্কে মোসেরি জানান, প্ল্যাটফরমের বর্তমান ভিডিও-শেয়ারিং সেবার পরিসর ও বিস্তার বাড়ানোর চেষ্টা ‘রিলস’-কে ঘিরে কেন্দ্রীভূত হবে। এ ছাড়াও প্রাইভেট মেসেজিং সেবার ব্যাপ্তি বাড়ানো এবং ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে কনটেন্ট নির্মাতাদের আয়ের উপায় আরও সহজ করার পরিকল্পনার কথা বলেছেন মোসেরি।