Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeধর্মদ্বিন প্রচারে ধৈর্য ও দৃঢ়তা জরুরি

দ্বিন প্রচারে ধৈর্য ও দৃঢ়তা জরুরি

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আপনার আগেও অনেক রাসুলের সঙ্গে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছিল, পরিণামে তারা যা (আজাব) নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত তা বিদ্রুপকারীদের পরিবেষ্টন করেছিল। ’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৪১)

তাফসির : আলোচ্য আয়াতে নবী-রাসুলদের বিদ্রুপকারীদের পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ কথা উল্লেখ করে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে দুঃখ-কষ্টের সময়ে ধৈর্য ধারণ ও অবিচলতার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। তেমনি যারা দাওয়াত-তাবলিগের দায়িত্ব পালন করবে তাদের জন্যও এ উপদেশ প্রযোজ্য।

বিজ্ঞাপনইরশাদ হয়েছে, ‘আপনার আগেও অনেক রাসুলকে মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল, কিন্তু তাদের মিথ্যাবাদী বলা ও কষ্ট দেওয়ার পরও তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল, যতক্ষণ না আমার সাহায্য তাদের কাছে এসেছে…। ’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৩৪)

যুগে যুগে ইসলামের সত্যতা প্রচারে বিরোধিতা করাই একটি দলের অভ্যাস ছিল। তাই সব সময় কেউ না কেউ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ করবে। মহান আল্লাহ তাদের ঠাট্টা-বিদ্রুপ ও মন্দ আচরণের প্রতিদানে কঠিন শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলবে, আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম, আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহ, তাঁর নিদর্শন ও রাসুল নিয়ে তোমরা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছ? তোমরা দোষ স্খলনের চেষ্টা করো না…। ’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৬৫)

মূলত ইসলামের প্রচার-প্রসারের দায়িত্ব পালনকারীদের জন্য জাগতিক যোগ্যতার পাশাপাশি স্থিরতা ও দৃঢ় মনোবলের অধিকারী হওয়া জরুরি। যেন অন্যের দুর্ব্যবহার ও কটু কথায় তাদের অন্তর ভেঙে না পড়ে এবং ক্রুদ্ধ হয়ে না পড়ে। তাই পবিত্র কোরআনে দৃঢ় মনোবলের অধিকারী নবী-রাসুলদের মতো ধৈর্য ধারণের কথা বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘অতএব আপনি ধৈর্য ধারণ করুন, যেমন ধৈর্য ধারণ করেছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাসুলরা, আপনি তাদের (কাফিরদের) জন্য তাড়াহুড়া করবেন না, তারা যখন প্রতিশ্রুত বিষয় দেখতে পাবে তাদের মনে হবে তারা দিবসের এক মুহূর্তের বেশি পৃথিবীতে অবস্থান করেনি, অতএব পাপাচারী সম্প্রদায়ই ধ্বংস হবে। ’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ৩৫)

একবার আয়েশা (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, আপনার জীবনে উহুদের দিনের চেয়ে কঠিন কোনো সময় এসেছিল? তখন রাসুল (সা.) বলেছেন, আকাবার দিন তোমার সম্প্রদায়ের কাছে আমি খুব বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম। আমি অনেকের কাছে দাওয়াত দিতে গিয়ে ব্যর্থ হই। তখন আমি দিকভ্রান্ত হয়ে সামনের দিকে চলছিলাম। … এ সময় জিবরাঈল (আ.) এসে আমাকে বললেন, আল্লাহ আপনার ও আপনার সম্প্রদায়ের কথা শুনেছেন। তিনি পাহাড়ের ফেরেশতাকে পাঠিয়েছেন যেন আপনি তাকে ইচ্ছামাফিক নির্দেশ দেন। … সব কথা শুনে রাসুল (সা.) বললেন, বরং আমি আশা করি যে আল্লাহ হয়তো তাদের বংশ থেকে এমন কাউকে বের করবেন যে একমাত্র আল্লাহ ইবাদত করে এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করে না। (বুখারি, হাদিস : ৩২৩১)

গ্রন্থনা : মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments