২০২৭ সালের মধ্যেই তাইওয়ান দখলে নিজের সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত করতে চায় চীন। যদিও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এখনও নিজের সামরিক শক্তি নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন। ইউক্রেনে রাশিয়া যে ধরনের বাধার মুখোমুখি হয়েছে তাই চীনকে নতুন করে ভাবাচ্ছে। রোববার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক উইলিয়াম বার্নস এমন দাবি করেছেন।
টেলিভিশনে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে বার্নস বলেন, শি জিনপিং-এর তাইওয়ান আক্রমণের ইচ্ছাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট তার বাহিনীকে ২০২৭ সালের মধ্যে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মানে এই না যে তিনি আসলেই তাইওয়ান আক্রমণ করছেন। আমার ধারণা, শি এবং চীনের সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে যে- তারা শেষ পর্যন্ত তাইওয়ান দখল করতে পারবে কিনা।
রোববারের সাক্ষাৎকারে বার্নস বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো সম্মিলিতভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। এ বিষয়টিই চীনের জন্য প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে। তবে ভবিষ্যতে তাইওয়ানের ওপর আক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি। বার্নস বলেন, আমি মনে করি যেহেতু তারা ইউক্রেনে পুতিনের অভিজ্ঞতা দেখেছে, তারা এখন কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত।
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্টরা চীনের ক্ষমতা দখল করলে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেতারা তাইওয়ান নামক দ্বীপে পালিয়ে যায় এবং এই দ্বীপকে চীন থেকে আলাদা ঘোষণা করে। এরপর থেকে তারা নিজেরাই দ্বীপটি শাসন করছে। যদিও জাতিসংঘ কিংবা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখনও তাইওয়ানকে আলাদা দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। ১৯৭৯ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানের সঙ্গে ‘ন্যাশন টু ন্যাশন’ সম্পর্ক ছিন্ন করেন। মার্কিন কংগ্রেসে ‘তাইওয়ান সম্পর্ক আইন’ পাস করা হয়। এতে তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ কেমন হবে তার একটি মানদণ্ড প্রণয়ন করা হয়।
চীন সবসময়ই তাইওয়ানকে পুনরায় নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়ে আসছিল। এই শতাব্দীতে এসে চীন সামরিক পরাশক্তি হয়ে ওঠায় তাইওয়ানের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ শুরু হয়। দিন যত যাচ্ছে ক্রমশ চীনা অভিযানের আশঙ্কা বাড়ছে। বিশ্বে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে তাইওয়ানের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন, আমেরিকার সেনারা চীনের আক্রমণ থেকে তাইওয়ানকে রক্ষা করতে পারে।