২০১২ সালের ১ জুলাই শুরু হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলো ঢাকা-টঙ্গী রেলপথের ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ। ঝুলে থাকা এ প্রকল্পের কারণে সমাপ্ত হওয়া বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশবাসী। জানা গেছে, প্রকল্পটি সমাপ্ত না হওয়ায় টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনের আউটার বরাবর ট্রেনের জটলা লেগেই থাকে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রকল্পটি যথাসময়ে সমাপ্ত হলে বিনা বাধায় ট্রেন আসত কমলাপুরে; উপরন্তু কমলাপুর থেকে ১০-১২ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়া সম্ভব হতো। শুধু ঢাকা-টঙ্গী রেলপথের ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পই নয়, রেলের চলমান ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের সবকটিরই সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে একাধিকবার। একইসঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রকল্প ব্যয়ও।
বলতে দ্বিধা নেই, ঢাকা-টঙ্গী রেলপথের ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন স্থাপনের কাজটি সফলভাবে শেষ করতে পারলে তা হবে রেলওয়ের একটি বড় সাফল্য। এটি রাজধানীর যানজট নিরসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার পাশাপাশি এ শহরের ওপর থেকে বাড়তি জনবলের চাপ হ্রাসেও সহায়ক হবে। মানুষ তখন নগরীর উপকণ্ঠে অনেক সাশ্রয়ে আবাসিক সুবিধা নিয়ে অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, পড়ালেখাসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজ সেরে দিনান্তে নিরাপদে ও সহজে ঘরে ফিরতে পারবে।
ভারত, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ মানুষ সকালবেলা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য নগরে প্রবেশ করে, আবার কাজ শেষ করে দিনশেষে যার যার বাসস্থানে ফিরে যায়। ঢাকা শহরের চারপাশে সার্কুলার রেলপথ স্থাপন করে বহু আগেই এ কাজটি করা যেত। কিন্তু নানা পরিকল্পনা ও বাহারি উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও কার্যত কিছুই হয়নি।
অপ্রিয় হলেও সত্য-রেলপথকে কেন্দ্র করে কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজটি দুরূহ। কারণ, সড়কপথের নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে, কথিত আছে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে তারা মহাপ্রতাপশালী। এদেশে ক্ষমতাবানদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো উদ্যোগ যত জনকল্যাণমুখীই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখে না-এমন প্রমাণ অতীতে বহুবার পাওয়া গেছে। এ বাস্তবতায় ঢাকা-টঙ্গী রেলপথের ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণসহ চলমান বাদবাকি প্রকল্পের কাজ যাতে সময়মতো সম্পন্ন হয়, তার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।