ওয়ানডে থেকে বেন স্টোকসের বিদায়ের পর ৫০ ওভারের ফরম্যাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন সাবেক খেলোয়াড়রা। ওয়াসিম আকরামের মতো অনেকেই বলছেন, একদিনের ক্রিকেটের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে। যখন ওয়ানডে নিয়ে সংশয়ের প্রশ্ন উঠছে, তখন টেস্ট নিয়ে আরেক ভয়ের কথা বললেন কেভিন পিটারসেন। লাল বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড বা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক।
সাবেক ইংলিশ ব্যাটারের মতে, ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা না বাড়ালে এসব দেশ থেকে টেস্ট ক্রিকেটের সংস্কৃতি উঠে যেতে পারে। দ্বিতীয় সারির এ দলগুলোর ব্যাপারে একটি সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তিনি। ২০২৫ সালের মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটে আমূল পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন পিটারসেন।
তার আশঙ্কা, এই সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় সারির দলগুলো হারিয়ে যাবে। ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলগুলোরই কেবল টেস্ট খেলা চালিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আগেও বলেছি, ২০২৫ সালের মধ্যে শুধুমাত্র বড় দলগুলোই টেস্ট খেলবে। ওইসব দেশের হয়তো খারাপ লাগতে পারে, তবে যেসব সিরিজে নিউজিল্যান্ড বা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা বড় দল বাদে অন্যকোনো দল থাকবে, তাদের একপাশে সরে যেতে হবে।’
নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পিটারসেন। বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের তুমুল জনপ্রিয়তার কারণে খেলোয়াড়দের চাহিদা বাড়ছে বলে মনে করছেন। পালাবদলের এমন সময়ে টেস্ট ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা না বাড়ানোর কারণে এই ফরম্যাট থেকে তাদের মনোযোগ সরে যাচ্ছে।
পিটারসেন বলেন, ‘একটি দৃশ্যপট দেখতে পাচ্ছি, যেখানে ২০২৫ সালে টেস্ট ক্রিকেট বলতে শুধু থাকবে অ্যাশেজ, ইংল্যান্ড বনাম ভারত, অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত, ভারত বনাম পাকিস্তান এবং অন্যান্য উঁচুমানের সিরিজ। যদি অন্যান্য দল তাদের টেস্ট ক্রিকেটারদের অনেক বেশি অর্থ প্রদান না করে, তারা হারিয়ে যাবে। ইসিবি তাদের টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে পারবে। তবে সব দল সেটা পারবে না।’
আইপিএলের দৌরাত্ম্য টেস্ট ক্রিকেটের জন্য অশনি সংকেত মনে করা হতো। প্রতিনিয়ত তা দৃশ্যমান হচ্ছে। বিশে^র বিভিন্ন দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লীগে দল কিনছে আইপিএল। আগামী বছর দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি লীগ। এসব লীগ মূলত চলবে আইপিএল মালিকানায়। কিছুদিন আগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের এক কর্মকর্তা জানান, ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে দীর্ঘমেয়াদে ক্রিকেটার পেতে স্থায়ী চুক্তিতে আনার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে আইপিএলের। যাতে আইপিএলসহ অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে ক্রিকেটার পেতে কোনো সমস্যা না হয়। এতে করে স্থায়ী চুক্তিতে যাওয়া ক্রিকেটারদের জাতীয় দলে খেলার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। তারা বরং টাকার কাছে দেশপ্রেম বিকিয়ে দেবেন।