Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeধর্মজান্নাতে নবীজি (সা.)-এর সান্নিধ্য প্রার্থনাকারী

জান্নাতে নবীজি (সা.)-এর সান্নিধ্য প্রার্থনাকারী

রাবিআ ইবনে কাব আসলামি (রা.)

রাবিআ ইবনে কাব আল আসলামি (রা.)। মদিনার নিকটবর্তী আসলাম গোত্রের এক সাদাসিধা যুবক। তিনি তাঁর মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন, গোত্রের অন্যদের মতো ছাগল চরাতেন। একদিন লোকমুখে মদিনায় নবীজি (সা.)-এর আগমনের কথা শোনেন।

তাঁর দাওয়াতি মিশন সম্পর্কে অবগত হন। তিনি অবগত হন নবীজি (সা.)-এর সততা, আমানতদারি সম্পর্কে। ফলে নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে উদগ্রীব হয়ে ওঠেন রাবিআ ইবনে কাব (রা.)। একসময় তিনি নবীজি (সা.)-এর দরবারে এসে ইসলাম গ্রহণ করেন। নবীজি (সা.)-কে প্রথম দেখাতেই তিনি অন্তর থেকে ভালোবাসেন।

রাবিআ ইবনে কাব আল আসলামি (রা.) রাসুল (সা.)-এর একজন মর্যাদাবান সাহাবি। আহলে সুফফার অন্যতম সদস্য। রাসুল (সা.)-এর অন্যতম খাদেম। তিনি নিজ পরিবার ছেড়ে পড়ে থাকতেন রাসুল (সা.)-এর দরবারে। তাঁর খেদমত করে খুঁজে পেতেন অনাবিল সুখ-শান্তি। এমনকি রাতেও পড়ে থাকতেন নবীজি (সা.)-এর দরজার কাছে। রাসুল (সা.) তাঁর বিয়ের ব্যবস্থা করেন। নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

রাসুল (সা.) তাঁর খেদমতে খুশি হয়ে একদিন তাঁকে বললেন, রাবিআ তুমি আমার কাছে যা চাইবে তোমাকে তা দেওয়া হবে। রাবিআ (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে কোনো ধনদৌলত চাননি। চাননি দুনিয়াবি কোনো জিনিস। তিনি এমন কিছু চেয়েছেন, যা আর কেউ চায়নি। তবে সবাই তা কামনা করে। সবার হৃদয়ে তার লালসা জাগে। রাবিআ ইবনে কাবের মুখ থেকেই শুনি তিনি নবীজির কাছে কী চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমি সারা দিন রাসুল (সা.)-এর খেদমত করতাম এবং রাতে তাঁর দরজার কাছে ঘুমাতাম। তখন আমি শুনতে পেতাম তিনি এই তাসবিহগুলো পাঠ করছেন—সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি। এটা শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত হয়ে যেতাম। আমার চোখ আমাকে পরাজিত করত। একসময় আমি ঘুমিয়ে পড়তাম। একবার রাসুল (সা.) বললেন, রাবিআ! তুমি আমার কাছে কিছু চাও; আমি তোমাকে দেব।

আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে একটু সময় দিন আমি চিন্তা-ভাবনা করে দেখি। এ কথা বলে আমি দুনিয়ার ক্ষণস্থায়িত্ব এবং তা বিনাশ হয়ে যাওয়ার কথা স্মরণ করলাম। রিজিক নিয়ে আমার কোনো পেরেশানি নেই, যা পাই তা দিয়ে আমার দিন চলে যায়। তারপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি চাই আপনি আল্লাহর কাছে আমার জন্য এই দোয়া করবেন—তিনি যেন আমাকে জাহান্নাম থেকে নাজাত দেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করান। অন্য বর্ণনায় আছে, রাবিআ ইবনে কাব (রা.) বলেন, আমি জান্নাতে আপনার সান্নিধ্য চাই।

রাসুল (সা.) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন তারপর বললেন, এ প্রশ্ন করতে তোমাকে কে আদেশ দিয়েছে? আমি বললাম, কেউ আমাকে এ কথা বলতে বলেনি। কিন্তু আমি এটা জানি যে দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী এবং ধ্বংসশীল এবং আপনি আল্লাহ তাআলার কাছে সম্মানিত ব্যক্তি। সুতরাং আমি চাই আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। তিনি বললেন, আমি করব। সুতরাং বেশি বেশি সিজদার মাধ্যমে তোমার জন্য আমাকে সহযোগিতা কোরো।

এই হাদিস থেকে সিজদার মর্যাদা ও গুরুত্বও অনুমান করা যায়। সিজদা বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করে। (সহিহ মুসলমি, হাদিস : ৪৮৯)

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments