চীনে প্রাণী থেকে উদ্ভূত নতুন এক ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ল্যাংইয়া হেপানিভাইরাস (লেভি) নামের ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত পূর্ব চীনের শানদং এবং হেনান প্রদেশের ৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের অনেকেরই জ্বর, ক্লান্তি এবং কাশির মতো উপসর্গ ছিল।
আক্রান্ত সবাই প্রাণী থেকে নতুন ওই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।
এখন পর্যন্ত মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাস সংক্রমণের কোনো প্রমাণ নেই বলে জানানো হয়েছে।
গবেষকরা প্রধানত ইঁদুরজাতীয় প্রাণী শ্রুর দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত করেছেন। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এ মাসে প্রকাশিত চীন, সিঙ্গাপুর এবং অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের লেখা একটি চিঠিতে ভাইরাসটির কথা তুলে ধরা হয়েছে।
গবেষক দলের সদস্য সিঙ্গাপুরের ডিউক-এনইউএস মেডিক্যাল স্কুলের ওয়াং লিনফা বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া কারো অবস্থা গুরুতর নয়। আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। ’ তবে তিনি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে জানিয়েছেন, প্রকৃতিতে বিদ্যমান অনেক ভাইরাস মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হলে কী প্রভাব পড়তে পারে তা আগে থেকে বলা যায় না।
বিজ্ঞানীরা জানান, পরীক্ষাধীন ২৭ শতাংশ শ্রুতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এই প্রাণীটিই নতুন শনাক্ত ভাইরাসের ধারক বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া পরীক্ষা করা পাঁচ শতাংশ কুকুর এবং দুই শতাংশ ছাগলেও এই ভাইরাস পাওয়া গেছে।
ল্যাংইয়া এক ধরনের হেনিপাভাইরাস, যা জুনোটিক ভাইরাসের একটি শ্রেণি। অন্য প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ানো ভাইরাসকে জুনোটিক বলা হয়। হেনিপাভাইরাস এমনিতে খুবই সাধারণ হলেও করোনা মহামারির কারণে এ প্রজাতির ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য মতে, প্রতি চারটি নতুন বা উদীয়মান সংক্রামক রোগের মধ্যে তিনটিই প্রাণী থেকে আসে।
জাতিসংঘ এর আগে সতর্ক করে জানিয়েছে, বন্য প্রাণী ধ্বংস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব এ ধরনের রোগ আরো বেশি দেখতে পাবে।
কিছু জুনোটিক ভাইরাস মানুষের জন্য মারাত্মক হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে নিপাহ ভাইরাস, যা এশিয়ার প্রাণী ও মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।