চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এ সময় বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ছাড়াও চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে আরও ১ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্য ও সেবার শুল্কমুক্ত সুবিধার ঘোষণা দেওয়া হয় চীনের তরফ থেকে।
এর ফলে বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ পণ্য ও সেবা বিনাশুল্কে চীনে প্রবেশাধিকারের সুযোগ পাবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে আমাদের ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় চীন। এখন আরও পণ্য এ সুবিধার আওতায় আসায় টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাতে ওভেন পণ্যের ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতা ছিল, সেটাও উঠে যাবে। এটিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হিসাবে দেখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হবে। তবে তিনি বলেছেন, তৃতীয়পক্ষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হলে চীন তার ভূমিকা পালন করবে। বস্তুত এক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা আরও সুস্পষ্ট ও সম্প্রসারিত হওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে কাজ করার ব্যাপারে চীন আগেও একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিফলন আমরা লক্ষ করিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ ‘এক চীন’ নীতিতে বিশ্বাসী। সেক্ষেত্রে চীন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে, আমরা এটাই চাই।
চীন বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার। এর সিংহভাগই আমদানিনর্ভর। অর্থমূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশের মোট পণ্য আমদানির ২৫ শতাংশই হয় চীন থেকে। আমদানির তুলনায় রপ্তানি অতি সামান্য। ফলে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি। এই ঘাটতি কমিয়ে আনা জরুরি। চীনের বিশাল বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশের তথা রপ্তানি বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।