Tuesday, April 16, 2024
spot_img
Homeধর্মচার ধরনের স্বভাব থেকে গুনাহের প্রণোদনা

চার ধরনের স্বভাব থেকে গুনাহের প্রণোদনা

শয়তানের প্ররোচনায় প্রায়ই আমরা নিজেকে নানা অপরাধে জড়িয়ে ফেলি। যার কারণে আমাদের উভয় জগতেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। আমরা যত পাপ করি, এগুলো মূলত চার ধরনের স্বভাবের মাঝে ঘূর্ণায়মান।

কারণ মানুষকে আল্লাহ তাআলা যে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, সেই মাটি ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির।

সে মাটির প্রভাব আমাদের শরীরে বিদ্যমান। আমাদের আদি পিতা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে নানা রঙের মাটি দিয়ে। আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম (আ.)-কে একমুঠো মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যা তিনি সমগ্র পৃথিবী থেকে নিয়েছিলেন। তাই আদম সন্তান মাটির বিভিন্ন বর্ণ ও প্রকৃতি অনুসারে হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ লোহিত, কেউ সাদা, কেউ কালো এবং কেউ এসবের মধ্যবর্তী বর্ণের। একইভাবে কেউ কোমল, কেউ কঠোর এবং কেউ অসৎ ও কেউ সৎ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৯৩)

এক. প্রভুসুলভ স্বভাব

মানুষ যখন নিজেকে প্রবল ক্ষমতাবান ভাবতে থাকে, তার মাঝে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস চলে আসে যে তার অনেক প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে। তখন এর থেকে তৈরি হয় অহংকার, সুনাম-সুখ্যাতি, প্রশংসা ও উচ্চ-বাক্যের প্রতি প্রচণ্ড মোহ। তার মনে এসব পাপের ব্যাপারে কোনো রকমের পাপবোধ অনুভব হয় না। আর এই পাপ ধীরে ধীরে হাজারো পাপের রাস্তা খুলে দেয়।

দুই. শয়তানি স্বভাব

শয়তানি স্বভাব। এ স্বভাব যার মধ্যে থাকবে তার ভেতরে হিংসা, বিদ্রোহ, অবাধ্যতা, কূটকৌশল, ধোঁকা, প্রতারণাসহ যত ধরনের ধ্বংসাত্মক গুনাহ রয়েছে সবই এই স্বভাবের কারণে।

তিন. পশুসুলভ স্বভাব

পশুর স্বভাবের প্রাথমিক স্তর হচ্ছে, যেকোনো উপায়ে মনের প্রবৃত্তি পূরণ করা। অবৈধ পন্থায় নিজের লোভ-লালসাকে বাস্তবায়ন করার দিকে ছুটে চলে। মানুষের ভেতর যখন এ স্বভাব চলে আসে, তাখন তার এ প্রবৃত্তির কারণে ধীরে ধীরে সে ব্যভিচার, চুরি, ডাকাতিসহ নিজের যাবতীয় বাসনা পূরণ করতে শুরু করে।

চার. হিংস্র অমানুষিক স্বভাব

এ স্বভাবের কারণে মানুষ একে অন্যের ওপর আক্রমণ করে। হত্যা, রাহাজানির মতো দুর্ধর্ষ অপরাধ করতে থাকে। অন্যের সম্পদ নির্দ্বিধাচিত্তে লুণ্ঠন করে থাকে।

এসব হচ্ছে গুনাহের মূল উপাদান। এগুলো থেকে ধীরে ধীরে অন্য গুনাহগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে তার চিন্তা-চেতনায়, লজ্জাস্থান, দুই হাত ও দুই পায়ে। এভাবে শরীরের নানা অঙ্গে গুনাহের প্রতিফলন ঘটে।

প্রথমেই তার মাঝে পশুসুলভ স্বভাব জাগ্রত হয়। এরপর এটি ধীরে ধীরে হিংস্রতায় রূপ লাভ করে। যখন এই দুটো সম্মিলিত হয়, তখন শয়তানি প্রভাব তার মধ্যে কাজ করতে থাকে। তার বিবেক, ধোঁকা ও প্রতারণা, কূটকৌশল ইত্যাদি কাজে ব্যবহার হতে থাকে। এভাবেই শেষ পর্যন্ত তার মাঝে প্রভুসুলভ স্বভাব তৈরি হয়ে যায়। আর তাই তার চূড়ান্ত পতন ডেকে আনে।

(ইহয়াউ উলুমিদ্দিন অবলম্বনে)

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments