Tuesday, April 23, 2024
spot_img
Homeধর্মক্রিপ্টোগ্রাফির পাঠোদ্ধারকারী দুই মুসলিম বিজ্ঞানী

ক্রিপ্টোগ্রাফির পাঠোদ্ধারকারী দুই মুসলিম বিজ্ঞানী

‘ক্রিপ্টোগ্রাফি’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘ক্রিপতোস’ থেকে, যার অর্থ গোপন, আর ‘গ্রাফি’ মানে হচ্ছে লিখন। বাংলায় বলা যায়, তথ্যগুপ্তিবিদ্যা। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ক্রিপ্টোগ্রাফি হলো সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগ রক্ষা করার বিশেষ একটি পদ্ধতি। যাতে শুধু যাদের জন্য তথ্যটি পাঠানো হয়েছে, তারাই তা পড়তে বা প্রক্রিয়া করতে পারে। তৃতীয় কোনো পক্ষ এই সংকেত থেকে কোনো কিছু উদ্ধার করতে পারে না।

ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করা হয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে। প্রাচীন যুগে বিশেষ করে যুদ্ধক্ষেত্রে এর ব্যবহার ব্যাপক ছিল। বর্তমানে গণিত, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং তড়িৎ প্রকৌশলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিক ক্রিপ্টোগ্রাফির উপস্থিতি চোখে পড়ে। এ ছাড়া এটিএম কার্ড, কম্পিউটার পাসওয়ার্ড, বৈদ্যুতিক বাণিজ্য বা ই-কমার্স-এর ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোগ্রাফির ব্যাবহারিক প্রয়োগ রয়েছে। বর্তমানে বহুল প্রচলিত ক্রিপ্টোকারেন্সির ধারণাটিও দাঁড়িয়ে আছে ক্রিপ্টোগ্রাফি ও ব্লকচেইন প্রযুক্তির ওপর। দাবি করা হয়, ক্রিপ্টোকারেন্সি জাল বা হ্যাক করা খুবই কঠিন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অসম্ভবও বলা হয়।

ইসলামের ইতিহাসে এমন একজন মনীষী আছেন, যার ব্যাপারে বলা হয়, তিনি ক্রিপ্টোগ্রাফির পাঠ উদ্ধার করতে পারতেন। তার পূর্ণ নাম, ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক ইবনে আস সাবাহ ইবনে ওমর ইবনে ইল আল কিন্দি। ল্যাটিন ভাষায় তিনি আল কিন্দোস নামে পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন মুসলিম বিজ্ঞানী, দার্শনিক, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিজ্ঞানী। তাকে অ্যারিস্টটলবাদী প্রথম মুসলিম দার্শনিক বলা হয়। তিনি আরব বিশ্বে গ্রিক ও হেলেনীয় সভ্যতার দর্শন প্রচারের প্রচেষ্টা চালান। ঐতিহাসিকদের মতে, তিনি শুধু অ্যারিস্টটলকে ন্যায়শাস্ত্রের গুরু নয়, তাকে দর্শনের গুরু বলেও মেনে নিয়েছিলেন। তার অতিভক্তির জন্যই আরবীয় অঞ্চলে অ্যারিস্টটলীয় দর্শনের ভিত্তি স্থাপিত হয়।

ইসলামের ইতিহাসে আরো একজন বিজ্ঞানীও ক্রিপ্টোগ্রাফি বা গোপন বার্তার পাঠোদ্ধারে পারদর্শী ছিলেন। তার নাম আবুল হাসান আলিব মোহাম্মদ আলী আল কালাসাদি। তিনি ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ গণিতবিদ, আইনশাস্ত্রবিদ ও পণ্ডিত। তাঁর আরেকটি বড় পরিচয় হলো, তিনি ইবনে হাজার আল আসকালানির ছাত্র ছিলেন। ১৪০৭ সালে মিসরে গেলে তিনি এই মহা মনীষীর শিষ্যত্ব লাভ করেন।

এ ছাড়া তিনি শামসুদ্দিন সমরকন্দির মতো পণ্ডিতদের কাছ থেকেও বিজ্ঞানের ওপর শিক্ষা গ্রহণ করেন। ইবরাহিম ইবনে ফতুর মতো বিখ্যাত পণ্ডিতের কাছে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান লাভ করেন। ক্রিপ্টোগ্রাফি বিষয়ে তিনি ‘সুলহে আল আশা’ শিরোনামে ১৪ খণ্ডের একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন। তিনি তার এই বিশ্বকোষ রচনায় তাজউদ্দিন আলী ইবনে আদ-দুরাহিম বিন মোহাম্মদ আস আলিবি আল মাসুদির একটি বইয়ের সহায়তা গ্রহণ করেন। বর্তমানে মাসুদির বইটি বিলুপ্ত।

তথ্যঋণ : স্বর্ণযুগে মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার, বিটকয়েন; ব্লকচেন প্রযুক্তি এবং অন্যান্য মুদ্রা

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments