Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeলাইফস্টাইলক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কী করবেন? 

ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কী করবেন? 

মারণব্যাধি ক্যানসারে ভয় কার নেই!এ সম্পর্কে সতর্ক হয়ে নিয়মমাফিক চললে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান এ রোগের জন্য দায়ী। এসব বিষয়ে সচেতনতা জরুরি।  

ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন সার্জন ডা. মো. ফারুক হোসেন। 

* লাল মাংসে থাকে ক্যানসারের ঝুঁকি

ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে হলে অবশ্যই লাল মাংস কম খেতে হবে। এ মাংস বেশি খেলে পাকস্থলী এবং কোলন ক্যানসারের আশংকা বেশি। সপ্তাহে ১৮ আউন্সের বেশি লাল মাংস খাওয়া যাবে না। লাল মাংস রক্তের কলস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

* সানস্ক্রিনের ব্যবহার

ক্যানসার থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি সানবার্নের চেয়েও ক্ষতিকর হতে পারে। আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন বা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকে ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। সূর্যের আলোতে বের হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ক্রিকেট খেলার সময়ও ক্রিকেটারদের সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। সানস্ক্রিনের মাত্রা হবে এসপিএফ ৩০ থেকে ৪০। সূর্যের আলো থেকে চোখের ক্ষতি হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের আলোতে থাকলে চোখে ছানি পড়তে পারে।

* অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়

অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় ক্যানসার ঝুঁকির সঙ্গে জড়িত। অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে হৃদরোগ হয় এবং এ থেকে মৃত্যুঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়ে। অতিরিক্ত চিনি রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং রক্তে অতিরিক্ত ফ্যাট মিশ্রিত হতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তনালিতে অতিরিক্ত ফ্যাটের কারণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অন্যান্য হৃদরোগ হতে পারে। চিনিযুক্ত পানীয় পান করার ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশংকা বেশি। মিষ্টি সোডা, স্পোর্টস ড্রিংক এমনকি শতভাগ ফলের রসও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হয়। বিজ্ঞানীরা চিনিযুক্ত পানীয় এর সঙ্গে কোলন ক্যানসারের কোনো সম্পৃক্ততা খুঁজে পাননি।

* ক্যানসার প্রতিরোধে শাক-সবজি এবং ফল

শাক-সবজি এবং ফল মুখ, গলা, শ্বাসনালি এবং খাদ্যনালির ক্যানসার প্রতিহত করতে পারে। খাবারগুলোর মাঝে কিছু উপাদান রয়েছে যা কোষকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন আড়াই কাপ ফল এবং সবজি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

* সাপ্লিমেন্টের ওপর নির্ভরশীলতা

সাপ্লিমেন্টের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে হবে। সবজি, ফল এবং শস্যদানাসমৃদ্ধ খাবার ক্যানসার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। সাপ্লিমেন্ট কখনোই একই ধরনের উপকার দিতে সক্ষম নয়। সাপ্লিমেন্টে পুষ্টির ভারসাম্য থাকে না। সাপ্লিমেন্ট কিছু অবস্থায় সাহায্য করতে পারে কিন্তু ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে না।

* হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস

ক্যানসার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের টিকা নিতে হবে। এ ভাইরাস সংক্রমিত হয় সেক্সের মাধ্যমে। ভাইরাসটি আমাদের শরীরে বছরের পর বছর অবস্থান করতে পারে যা আমরা জানতেও পারি না। মহিলাদের সব ধরনের সারভাইক্যাল বা জরায়ু মুখের ক্যানসারের জন্য এ ভাইরাসটি দায়ী। এ ছাড়া পুরুষ ও মহিলা যৌনাঙ্গ, পায়ুপথ, মুখ এবং গলার ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে ভাইরাসটি। মেয়েরা টিকা নিতে পারে ৯ থেকে ২৬ বছর বয়সের মধ্যে। ছেলেরা টিকা নিতে পারে ৯ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে। সেক্স করার সময় কনডম ব্যবহার করলে হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসবে।

* ব্যায়ামে কমে ক্যানসারের ঝুঁকি

যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে তাদের কোলন, ব্রেস্ট এবং ইউটেরাসের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। যখন ব্যায়াম করেন তখন শরীর অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করে থাকে। খাবার দ্রুত হজম হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি কিছু হরমোন তৈরি হতে বাঁধা দিয়ে থাকে যারা ক্যানসার সৃষ্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত। নিয়মিত ব্যায়াম ক্যানসার ছাড়াও হার্টের সমস্যা এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে থাকে।

* ধূমপান ত্যাগ করুন

ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্যানসারসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার সৃষ্টি হয়ে থাকে। ধূমপানের কারণে হার্টের রোগ এবং ফুসফুসের রোগ হতে পারে। বর্তমান বিশ্বে হার্টের রোগ নাম্বার ওয়ান কিলার ডিজিজ। আমাদের দেশে আশঙ্কাজনক হারে হার্টের রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অ্যালকোহল সেবন অথবা নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করলে শরীরের টিস্যু ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ধীরে ধীরে লিভার ড্যামেজ হয়ে যায়। এ থেকে লিভার সিরোসিস এবং সবশেষে লিভার ক্যানসার হতে পারে। হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস পজিটিভদের লিভার ক্যানসার হওয়ার আশংকা থাকে। যাদের ক্রনিক লিভারের সমস্যা রয়েছে, একের অধিক সেক্স পার্টনার রয়েছে অথবা ড্রাগ নেওয়ার বা নিডল শেয়ার করে থাকে তাদের হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস হওয়ার আশংকা রয়েছে। হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের টিকা এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। যথাসময়ে বুস্টার ডোজ অবশ্যই নিতে হবে। একটি টিকার মাধ্যমে আপনি লিভার ক্যানসার, সিরোসিস অথবা লিভারের জটিল রোগ থেকে সহজেই রক্ষা পেতে পারেন।

* মুখের অভ্যন্তরে সাদা হলে

এ সংক্রমণ দেখা দিলে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। মুখের রোগ লিউকোপ্লাকিয়ার যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। মুখের আলসারকে সামান্য আলসার ভেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়। কখনো কখনো মুখের আলসার মুখের ক্যানসারের পূর্বাবস্থা হিসাবে দেখা দেয়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments