Friday, April 19, 2024
spot_img
Homeধর্মকাতারে ফুটবল দেখতে আসা লাখ লাখ দর্শক দেখে গেলেন ইসলামের সৌন্দর্য

কাতারে ফুটবল দেখতে আসা লাখ লাখ দর্শক দেখে গেলেন ইসলামের সৌন্দর্য

পুরো বিশ্বকাপের সময়ে কাতারে কোনো সহিংসতা বা অপরাধের ঘটনা সামনে আসেনি। এছাড়া ইভটিজিং বা হয়রানির অভিযোগও জানাননি কোনো নারী। এত বড় একটি আয়োজন নীতির মধ্যে থেকে এমনভাবে সফল করার জন্য ধন্যবাদ পাচ্ছে কাতার।

ফুটবল বিশ্বকাপের গ্যালারিতে বসে অ্যালকোহল ছাড়া খেলা দেখা সম্ভব এটি কয়েকদিন আগেও অকল্পনীয় ছিল ভক্তদের কাছে। এছাড়া বিকিনি, অশ্লীলতা ছাড়াও যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট আয়োজন করা যায় তাও ছিল ধারণার বাইরে। সেই অসম্ভব কাজটি শেষ পর্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করেছে কাতার বরং কাতারে ফুটবল দেখতে আসা লাখ লাখ দর্শক দেখে গেলেন ইসলামের সৌন্দর্য।

বিশ্বকাপ কাতারে বসা নিয়ে অনেকের আপত্তি ছিল। সেই আপত্তি কয়েকগুণ বেড়ে যায়, যখন আসার শুরুর মাত্র কিছুদিন আগেই কাতার স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, সেখানে অবৈধ সঙ্গী নিয়ে থাকা যাবে না। পরা যাবে না খোলামেলা পোশাকও। এ নিয়ে বেজায় চটে পশ্চিমা বিশ্ব। তবে তাদের নীতিতে অনড় থেকেছে কাতার। শেষ পর্যন্ত এসব নিয়ম মেনেই বিশ্বকাপ দেখতে এসেছেন লাখো দর্শক।

২০১০ সালে নিশ্চিত হয় যে ২০২২ সালের বিশ্বকাপের আসর বসবে কাতারে। তারপরই দেশটি এই আয়োজন ঘিরে অকল্পনীয় পরিকল্পনা হাতে নেয়। দ্রুত শুরু করে বাস্তবায়ন। একের পর এক চোখ ধাঁধানো স্টেডিয়াম বানিয়েই খ্যান্ত হয়নি আল থানিদের কাতার। রাস্তা-ঘাট, হোটেলসহ অত্যাধুনিক যাদুঘর নির্মাণ করে তারা।

তবে এসবের পাশাপাশি তারা যে গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা করে তা হলো আরব ও ইসলামের সৌন্দর্য প্রদর্শন। রাস্তার দেয়ালে দেয়ালে লিখে দেয় ইসলামের বানী, মহানবীর বিভিন্ন কথা। আসর জুড়ে হাজারো স্বেচ্ছাসেবকরা পশ্চিমা ও কথিত আধুনিক দর্শকদের হিজাবের মর্ম বুঝায়। তাদেরকে হিজাব পরিয়ে উপলদ্ধি করানোর চেষ্টা করে। মসজিদে মসজিদে হাজার হাজার তরুণ ফুটবল দর্শকদের ইসলাম সম্পর্কে ধারণা দেয়।

বিশ্বকাপের ভক্তদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে মসজিদগুলো। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রচুর লোক মসজিদগুলোতে সময় কাটান ও ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। মসজিদে বেশিরভাগ দর্শনার্থীকে পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়। এছাড়া মুয়াজ্জিনের আজান, কাতারি স্থাপত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে অনেকে আগ্রহী ছিলেন।

মসজিদের দরজায় ৩০টিরও বেশি ভাষায় ইসলাম সম্পর্কে বৈদ্যুতিন বোর্ডগুলো দর্শকদের তাদের ফোনে দেখার অনুমতি দেওয়ার জন্য স্থাপন করা হয়। যারা চান তাদের দেওয়া হয় বিভিন্ন ভাষায় ইসলাম পরিচিতিমূলক পুস্তিকা। কাতারের আওকাফ এবং ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২২ বিশ্বকাপের সময় ইসলাম এবং এর শিক্ষাগুলো প্রচার করার জন্য একটি প্যাভিলিয়ন চালু করে।

অনেক পশ্চিমা দর্শক কাতারে নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। তবে দোহায় পা রাখার পরই তাদের সেই শঙ্কা কেটে যায়। যেমন আমেরিকান তরুণী আন্দ্রেয়া এম আল জাজিরাকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও অনেকটা বেশি নিরাপদ কাতার।

বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতি থেকে আসা ফুটবল দর্শকরা কাতারে বিভিন্ন স্থানে এভাবে ইসলামের সঙ্গে পরিচিত হন। ইসলাম সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পেরে তারা খুশি। কাতার বিশ্বকাপের আয়োজন যেমন সফল ও সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে। একইভাবে লাখ লাখ মানুষ ইসলামের সৌন্দর্য দেখে বাড়ি ফিরেছে। হয়তো অনেকের মনে দাগ কেটেছে। মুসলিম তরুণদের হাসিমুখ ও ব্যবহার তাদের হয়তো মনে থাকবে আজীবন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments