কবরকেন্দ্রিক শিরক খুবই ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্মক কাজ। অনেক মানুষ কবর তাওয়াফ করে, কবরের ব্যক্তির কাছে প্রয়োজন পূরণের জন্য প্রার্থনা করে এবং বিশ্বাস করে যে মৃত ওলিরা তাদের প্রয়োজন পূরণে সক্ষম! অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘আল্লাহ ছাড়া যাদের তোমরা ডাকো তারা তোমাদের মতো (আল্লাহর) বান্দা। সুতরাং তোমরা তাদের ডাকো। অতঃপর তারা যেন তোমাদের ডাকে সাড়া দেয়, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৯৪)
কিছু কিছু কবর পূজারি কবরের চতুষ্পার্শ্বে তাওয়াফ করে, তারা বিভিন্ন স্তম্ভে চুম্বন করে, আবেগের সঙ্গে তা স্পর্শ করে এবং তাকে সিজদা করে। কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে নিজেদের প্রয়োজন পূরণের জন্য প্রার্থনা করে। কেউ রোগব্যাধি থেকে আরোগ্য চায়, কেউ সন্তান চায়। আবার অনেকে চিত্কার করে বলে, ‘বাবা! অনেক দূর দেশ থেকে এসেছি আপনি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না। ’
সুতরাং তুমি যেন প্রচলিত কথার ধোঁকায় না পড়ো যে, অমুক দরিদ্র ব্যক্তি অমুক কবরের কাছে গিয়ে দোয়া করার কারণে ধনী হয়ে গেছে। অমুক রোগী আরোগ্য লাভ করেছে। অমুক নিঃসন্তান সন্তান লাভ করেছে।
কিছু মানুষ কবরের চারদিকে তাওয়াফ করে, কোনায় কোনায় স্পর্শ করে, কবরের দেয়াল চুম্বন করে, কবরের সামনে সিজদা করে, রোগমুক্তি ও সন্তানলাভের দাবি জানায়। অনেক সময় জিয়ারতকারী কবরবাসীকে এভাবে সম্বোধন করে, ‘বাবা! অনেক দূর থেকে তোমার কাছে এসেছি, তুমি আমাকে বঞ্চিত কোরো না। ’
এরপর রোগ ভালো করে দেওয়ার জন্য, হারানো বস্তু ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে ডাকতে থাকে। দুই রাকাত নামাজ পড়ে এসব ব্যাপারে আল্লাহকে ডাকার কথা ভুলে যায়। আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে গোমরাহ আর কে হতে পারে, যে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কাউকে ডাকে, যে কিয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দেবে না এবং তারা তাদের দোয়া সম্পর্কে উদাসীন। ’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ৫)
নবী আলাইহিস সালাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে কোনো শরিককে ডাকতে ডাকতে মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (বুখারি, হাদিস : ৪৪৯৭)
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।