ভিডিও গেমকে প্রতিযোগিতামূলক পেশাদার খেলার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে বড় অবদান রেখেছে গেম নির্মাতা ব্লিজার্ড। তাদের তৈরি ওয়ারক্রাফট ও স্টারক্রাফট গেমগুলোর ওপরই প্রথম ই-স্পোর্টস ঘরানার গেমগুলো, যেমন—‘ডটা’ তৈরি হয়েছিল। ব্লিজার্ড একেবারে ই-স্পোর্টসের শুরু থেকেই ক্ষেত্রটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
সেই ব্লিজার্ডের তৈরি গেম ‘ওভারওয়াচ’ প্রকাশের পর থেকেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে আসে।
হিরো-শ্যুটার মানেই ওভারওয়াচ, ভ্যালোরেন্ট গেমটি প্রকাশের আগে এমনটাই ছিল। ওভারওয়াচ অবশ্য আজ পুরনো এক নাম। বলা যায়, অনেকটা সে জন্যই ব্লিজার্ড বাজারে এনেছে তাদের পরবর্তী গেম ‘ওভারওয়াচ ২’।
ওভারওয়াচ পুরনো গেম, খেলার মানে নেই—এ অপবাদ থেকে বাঁচতেই ‘ওভারওয়াচ ২’ বাজারে এনেছে ব্লিজার্ড, সেটা গেমটির প্রতিটি অংশে দৃশ্যমান। প্রথম গেমের প্রতিটি হিরো নতুন গেমে আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হিরোদের মধ্যে পরিবর্তনও আনা হয়নি। পুরনো গেমের বেশ কিছু ম্যাপও এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। গেমপ্লেতে নতুনত্বও তেমন নেই, যা আছে সেটা তেমন বড়ও নয়। তবে ভক্তদের সবচেয়ে বেশি আশাহত করবে গ্রাফিকসে পরিবর্তনের অভাব। দুটি গেম পাশাপাশি চালালে দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটি পুরনো আর কোনটি মাত্রই বাজারে এসেছে।
তবে গেমপ্লে আছে আগের মতোই। প্রতিটি দলে থাকবে নানা ঘরানার হিরো, যাদের ক্ষমতা ও দুর্বলতা একেবারেই একে অপরের চেয়ে আলাদা। সুন্দরভাবে দলের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে হার নিশ্চিত। দুটি দল চেষ্টা করবে হয় ম্যাপের কিছু জায়গা দখলে নেওয়ার অথবা কার্গো ডেলিভারি করা বা সেটাকে আটকানোর। নির্দিষ্ট সময়ের শেষে যে দল সবচেয়ে ভালোভাবে এলাকা দখলে রাখতে পারবে বা কার্গো পৌঁছাতে বা বাধা দিতে পারবে, তারাই হবে জয়ী। হিরো শ্যুটারের গত্বাঁধা গেমপ্লে বলা যায়।
গ্রাফিকস, নতুন ম্যাপ বা গেমপ্লেতে নতুনত্ব—এগুলোর অভাব অবশ্য ‘ওভারওয়াচ ২’-এর নতুন হিরো আর তাদের নিয়ে খেলার মজা মোটেই নষ্ট করেনি। আগে প্রতিটি ম্যাচ ছয়জনের দল নিয়ে খেলার সিস্টেম থাকলেও এবার সেটা পাঁচজন করা হয়েছে। ফলাফল তিন ঘরানার দুজন করে হিরো নিয়ে ছয়জনের দল বানানোর সুযোগ আর থাকছে না, ডিফেন্স, অফেন্স আর হিলিং—অন্তত একটা দিকে ভারসাম্য নষ্ট হবেই। গেমারদের নতুন করে ম্যাচ জেতার জন্য স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা ছাড়া উপায় থাকছে না, যদিও ম্যাপ আর হিরো থাকছে আগের মতোই। গেমাররা নতুন হিরোর ক্ষমতা, দুর্বলতা এবং এনিমেশনের প্রশংসা করেছেন বেশ। তাঁদের মতে ব্লিজার্ড প্রতিটি চরিত্রের ভারসাম্য করেছে এত চমৎকারভাবে, যা আর কোনো হিরো শ্যুটার এখনো দেখাতে পারেনি। ই-স্পোর্টস নিয়ে তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার চমৎকার নিদর্শন।
হাতে গোনা কয়েকটি নতুন ম্যাপ, গেমপ্লে ব্যালান্সে কিছু পরিবর্তন আর নতুন সব হিরোর আগমন—শুনে মনে হতেই পারে মূল ওভারওয়াচের আপডেট হিসেবেই এ গেমটিকে প্রকাশ করা যেত, এটাকে আসলে সিক্যুয়াল বলা ভুল হচ্ছে। এমনটাই ভাবছেন ভক্তরাও। তার সঙ্গে আছে গেমটি খেলার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা, যেমন—পোস্টপেইড মোবাইল ফোন নম্বর ছাড়া অ্যাকাউন্ট করা যাবে না, প্রতিটি নম্বরে করা যাবে একটি অ্যাকাউন্ট, আগের গেমের কোনো প্রগ্রেস নতুন গেমে আনা যাবে না, যদিও গেম দুটিতে পার্থক্য সামান্যই। তার মধ্যে আছে নতুন কনটেন্টের অভাবের পরও চড়া মূল্যে গেমটি বিক্রি করা—সব মিলিয়ে ব্লিজার্ডের ওপর ভালোই চটেছেন ভক্তরা।
বয়স
গেমটি খেলতে পারবে কিশোর বয়সীরা
খেলতে যা যা লাগবে
খেলতে তেমন শক্তিশালী পিসির প্রয়োজন নেই, অন্তত এক গিগাবাইট গ্রাফিকস এবং পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকাশিত প্রসেসর থাকলেই যথেষ্ট। খেলতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাগবে।