Friday, April 19, 2024
spot_img
Homeধর্মউম্মতের জন্য নবীজি (সা.)-এর কান্না

উম্মতের জন্য নবীজি (সা.)-এর কান্না

প্রিয় নবী (সা.)-কে গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি তাঁর উম্মতদের খুব বেশি ভালোবাসতেন। সর্বদা তাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করার চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উম্মতকে বোঝাতে তিনি সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমার ও মানুষের উদাহরণ হলো ওই ব্যক্তির মতো, যে আগুন জ্বালিয়েছে। আগুন চারপাশ আলোকিত করলে কীট-পতঙ্গ এসে ভিড় জমাতে থাকে। পতঙ্গগুলো আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর ওই লোক তাদের সেখান থেকে তুলে ছুড়ে ফেলে। আবার তারা সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করেন। আমি তোমাদের জান্নামের আগুন থেকে বাধা দিই। আর মানুষ সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৮৩)

তিনি তার উম্মতদের জন্য এতটাই চিন্তা করতেন যে তিনি মহান আল্লাহর দরবারে তাঁর উম্মতদের মুক্তির জন্য কান্নাকাটি করতেন।

আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইবরাহিম (আ.)-এর কথা তিলাওয়াত করলেন, ‘হে আমার রব, তারা অনেক মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছে, তাই যারা আমার অনুসরণ করবে তারা আমার দলভুক্ত, আর যারা আমার অবাধ্য হবে (তাদের ব্যাপারে) আপনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। ’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৬)

আর ঈসা (আ.) বলেছেন, আপনি তাদের আজাব দিলে তারা আপনার বান্দা, আর ক্ষমা করলে আপনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। ’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ১১৮)

অতঃপর রাসুল (সা.) দুই হাত তুলে বলেন, ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মত! আমার উম্মত!’ আল্লাহ তাআলা বললেন, ‘হে জিবরাইল, মুহাম্মদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করো, আপনি কাঁদছেন কেন?’ মহান আল্লাহ সব কিছুই অবগত আছেন। জিবরাইল (আ.) এসে জিজ্ঞাসা করল। রাসুল (সা.) তাকে নিজের কথা বললেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে জিবরাইল, তুমি মুহাম্মদের কাছে গিয়ে বলো, ‘আমি শিগগিরই আপনার উম্মতের ব্যাপারে আপনাকে সন্তুষ্ট করব এবং আমি আপনাকে কষ্ট দেব না’। ” (মুসলিম, হাদিস : ২০২)

কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে তাঁর প্রিয় উম্মতদের জন্য সুপারিশ করার জন্য তিনি তাঁর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত একটি মাকবুল দোয়া জমা রেখে দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সব নবীর এমন কিছু দোয়া আছে, যা আল্লাহর কাছে কবুল হয়। সব নবী দ্রুত নিজেদের জন্য দোয়া করেছে। আমি তা কিয়ামতের দিন উম্মতের সুপারিশের জন্য গোপন করে রেখেছি। আমার উম্মতের মধ্যে যে আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছু শরিক না করে মৃত্যুবরণ করবে, সে ইনশা আল্লাহ আমার সুপারিশ লাভ করবে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৯)

এমন দরদি বন্ধু পেয়েও যদি আমরা তাঁর হক আদায় করতে না পারি, তাঁর সুন্নত পালন করতে না পারি, তাহলে আমাদের এই দুর্ভাগ্যের সীমা থাকবে না। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে নবীজি (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments