ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিজ দেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান। রাইসির ডেপুটি চিফ অব স্টাফ রোববার রিয়াদে ওই বৈঠকের আমন্ত্রণের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। কয়েক দিন পূর্বেই চীনের মধ্যস্ততায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এর আগে প্রায় সাত বছর সম্পর্ক ছিন্ন ছিল দুই দেশের মধ্যে।
আরটি জানিয়েছে, এখন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকের পরিকল্পনা চলছে। দুই দেশই চায় সব রেষারেষি ভুলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সৌদি ঐক্য গড়ে তুলতে। যদিও দুই দেশই তাড়াহুড়া না করে সাবধানে এগুতে চাইছে। ইরানের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ মোহাম্মদ জামশিদি রোববার টুইটারে লিখেছেন, বাদশাহ সালমান ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির কাছে একটি চিঠিতে তাকে সৌদি আরব সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই আমন্ত্রণকে স্বাগত জানিয়েছেন রাইসি। তিনি দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে ইরানের প্রস্তুতির কথা বলেছেন। জামশিদি আরও জানান, ওই চিঠিতে বাদশাহ সালমান সৌদি আরব এবং ইরানকে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দেশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
২০১৬ সালে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যেকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়। ওই বছর শিয়া ধর্মগুরু নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সৌদি। এর প্রতিবাদে ইরানি বিক্ষোভকারীরা সৌদি কনস্যুলেটে হামলা চালায়। সেই হামলার প্রেক্ষিতেই দুই দেশের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এছাড়াও আঞ্চলিক আরও বেশ কিছু ইস্যুতে শত্রুতে পরিণত হয় দুই দেশ। ইয়েমেন এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধেও বিপক্ষ ছিল রিয়াদ ও তেহরান। ইরান লেবাননে হিজবুল্লাহ আন্দোলনকে সমর্থন করে। অপরদিকে সৌদি একে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
যদিও অনেকটা আকস্মিকভাবেই চীনের মধ্যস্ততায় সম্পর্ক পুনস্থাপনে আগ্রহী হয় দুই দেশ। গত সপ্তাহে সৌদি আরব এবং ইরান ঘোষণা করে তারা কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করবে এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকবে। চীনের এমন পদক্ষেপকে যুগান্তকারী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমাদের প্রভাবও কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। রিয়াদ ও তেহরান এখন একে অপরের দেশে দূতাবাস খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া ইরান সৌদিকে আশ্বস্ত করেছে যে, তারা ইয়েমেনের হুতিদের আর অস্ত্র সহায়তা দেবে না।
রোববার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান তেহরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে জানান, তিনি সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সাথে অদূর ভবিষ্যতে দেখা করবেন। এরইমধ্যে সৌদি বাদশাহ ইরানের প্রেসিডেন্টকে রিয়াদে আমন্ত্রণ জানালেন। তবে ইরানি প্রেসিডেন্ট সৌদি সফরে যাবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।