Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামআমিনবাজার ট্র্যাজেডি মামলার রায়: জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে

আমিনবাজার ট্র্যাজেডি মামলার রায়: জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে

রাজধানীর আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ১৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া রায়ে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৫ জনকে খালাস এবং তিন আসামি মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলাচরে ডাকাত আখ্যা দিয়ে মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের তিন শিক্ষার্থীসহ ছয় কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও পরে প্রাণে বেঁচে যান।

পুলিশ ও পুলিশের সিআইডি শাখার হাত ঘুরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তভার র‌্যাবের হাতে ন্যস্ত হলে তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

আমিনবাজার ট্র্যাজেডি সেদিন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল সামাজিক অবক্ষয়ের কোন পর্যায়ে আমরা পৌঁছেছি। ইসলামের অন্তর্নিহিত মর্মবাণী অনুযায়ী যেখানে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র শবেবরাত উদযাপিত হওয়ার কথা, সেখানে একদল দুর্বৃত্ত উন্মত্ত আচরণের প্রকাশ ঘটিয়ে নিজেদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থের জন্য অবলীলায় নিরীহ ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

শুধু তাই নয়, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার ছাত্রদের তারা ‘ডাকাত’ উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়েরও করেছিল। স্বস্তির বিষয়, অবশেষে আদালতের রায়ে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং হৃদয়বিদারক এ ঘটনার কুশীলবদের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এ রায় নিঃসন্দেহে শিক্ষণীয় এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার পরিণাম সম্পর্কে সুস্পষ্ট বার্তা।

মৃত্যু অবধারিত হওয়ায় স্বাভাবিক নিয়মে কারও মৃত্যু হলে তা নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকে না। কিন্তু মৃত্যু যদি হয় অস্বাভাবিক, তাহলে স্বজনদের মর্মযাতনার সীমা থাকে না। দেশে অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বর্তমানে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। কোনো সমাজ সুস্থ ও স্বাভাবিক নিয়মে না চললে তখন নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হয়। বিচার বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অপরাধীর মনে ভীতির জন্ম দেয়। এক্ষেত্রে শাস্তি নিবৃত্তমূলক ভূমিকা পালন করে। কাজেই যে কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর তা যত দ্রুত উদ্ঘাটন করা যায় এবং অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনা যায়, ততই মঙ্গল।

খুনসহ সব ধরনের অপরাধের ঘটনার যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা গেলে সমাজে অপরাধ কমে আসবে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। প্রত্যেক নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্র এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে, এটাই প্রত্যাশা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments