Thursday, March 28, 2024
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদ USAঅ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল’র ১৪ তম বার্ষিক কনভেনশন : ‘সাউথ...

অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল’র ১৪ তম বার্ষিক কনভেনশন : ‘সাউথ এশিয়ান – টুগেদারস উই আর মেকিং হিস্টোরী’

‘সাউথ এশিয়ান – টুগেদারস উই আর মেকিং হিস্টোরী’ এ শ্লোগানকে সামনে নিয়ে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল’র ১৪ তম বার্ষিক কনভেনশন। গত ১২ ডিসেম্বর রোববার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যে ৪টা পর্যন্ত শেরাটন লাগোর্ডিয়া ইস্ট হোটেলের বিশাল হল রুমে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।

বর্ণাঢ্য আয়োজন আর উৎসবমুখর পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রে মূলধারায় দক্ষিণ এশিয়ার ৮ দেশীয় ইমিগ্র্যান্টদের একমাত্র সংগঠন অ্যাসালের এ ব্যতিক্রমী মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। রেকর্ড সংখ্যক জনপ্রতিনিধি সহ দক্ষিণ এশিয় ইমিগ্র্যান্টদের সরব উপস্থিতিতে বিশাল হল রুম মুখরিত থাকে। খবর ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম’র।

কনভেনশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অ্যাসালের ১৪ তম বার্ষিক কনভেনশন কমিটির চেয়ার ও সিটি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শাহাদাত হাসান।
অনুষ্ঠানে কীনোট স্পীকার ছিলেন মার্কিন সিনেটের মেজরিটি লিডার চাক শুমার। ভার্চুয়ালী ভাষণ দেন বর্ষিয়ান ডেমোক্রেট লিডার চাক শুমার।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ্যাসালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ও প্রতিষ্ঠাতা মূলধারার প্রখ্যাত লেবার লিডার মাফ মিসবাহ উদ্দিন। অসুস্থতাজনিত কারণে ভার্চুয়ালী বক্তব্য রাখেন মাফ মিসবাহ উদ্দিন।

অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন অ্যাসালের ন্যাশনাল সেক্রেটারী এম করিম চৌধুরী। তিনি কনভেনশনে বিগত বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে অ্যাসালের ন্যাশনাল কমিটিসহ বিভিন্ন চ্যাপ্টারের কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন।
অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট কম্পট্রোলার থমাস দিনাপলি, নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিয়া তিশ জেমস, নিউইয়র্ক স্টেট সেনেট মেজরটিলি লিডার আন্দ্রেয়া স্টুয়ার্ট-ক্যাসিনস, নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট জুমানে ডি. উইলিয়ামস, নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার-ইলেক্ট ব্র্যাড ল্যান্ডার, কুইন্স কাউন্টি সিভিল কোর্টের নব নির্বাচিত বিচারক এটর্নী সোমা সাঈদ, নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ৬ থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ৯ থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান ইয়েভেট ক্লার্ক, নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১২ থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান ক্যারোলিন বি. ম্যালোনি, নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১১ থেকে নির্বাচিত সাবেক কংগ্রেসম্যান ম্যাক্স রোজ, ব্রঙ্কস বরো প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ভেনেসা গিবসন, জর্জিয়া স্টেট সিনেট ডিস্ট্রিক্ট ৫ গুইনেট কাউন্টির সিনেটর শেখ রহমান, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ডিস্ট্রিক্ট ৬ নাসাউ কাউন্টির সিনেটর কেভিন থমাস, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ডিস্ট্রিক্ট ১৩ কুইন্সের সিনেটর জেসিকা রামোস, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ডিস্ট্রিক্ট ১৯ ব্রুকলিনের সিনেটর রোকসানী পারসৌড, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ডিস্ট্রিক্ট ৩১ ব্রঙ্কস/ম্যানহাটন এর সিনেটর রবার্ট জ্যাকসন, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ২৪ কুইন্স এর অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ২৬ কুইন্স এর অ্যাসেম্বলিম্যান এডওয়ার্ড ব্রাউনস্টেইন, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৩১ কুইন্স এর অ্যাসেম্বলিম্যান খলিল অ্যান্ডারসন, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৩৮-কুইন্স এর অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৬৩ অ্যাসেম্বলিম্যান এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির স্টেটেন আইল্যান্ড’র চেয়ার মাইকেল জে. কুসিক, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৩৯-এর অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৪০ কুইন্স এর অ্যাসেম্বলিম্যান রন কিম, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৩৪ কুইন্স এর অ্যাসেম্বলিওমেন ইলেক্ট জেসিকা গঞ্জালেজ রোজাস, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৫৯ ব্রুকলিন এর অ্যাসেম্বলিওমেন জেমি উইলিয়ামস, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ১১ ব্রঙ্কস এর কাউন্সিলম্যান এরিক ডিনোভিটজ, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ২০ কুইন্স এর কাউন্সিলম্যান ইলেক্ট স্যান্ড্রা উং, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ২৫ কুইন্স এর কাউন্সিলম্যান ইলেক্ট শেখর কৃষ্ণান, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ ব্রুকলিনের কাউন্সিলওম্যান-ইলেক্ট শাহানা হানিফ, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ৪৫ ব্রুকলিনের কাউন্সিলওম্যান ফারাহ লুই প্রমুখ।

কনভেনশনে অতিথিরা ছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন মূলধারা ও অ্যাসাল’র বিভিন্ন চ্যাপ্টারের নেতৃবৃন্দ। ন্যাশনাল ট্রাস্টি ইউটিসি এসোসিয়েটস’র সিইও ইঞ্জিনিয়ার আজিজ আহমেদ, বরেন্য সঙ্গীত শিল্পী বেবি নাজনীন, এটর্নী মঈন চৌধুরী, অ্যাসাল কর্মকর্তা শরাফত হুসেন বাবু, মো. রাব্বি আলম, সাহানা বেগম, ডা. মজিবুর রহমান, সৈয়দ তাহমিদুল হক, ডা. মুজিবুল হক, মোঃ আলাউদ্দিন, সামাদ মিয়া জাকের, ওমর ফারুক খসরু, সুলতানা খানম, আদান ইসলাম, আকবর হুসাইন, মোহাম্মদ শাহীন, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট জসিম ভূইয়া প্রমুখ।

কনভেনশন উদ্বোধনকালে প্রফেসর শাহাদাত হাসান বলেন, “আমি কনভেনশন কমিটির সভাপতি হিসেবে ১৪তম বার্ষিক কনভেনশনের উদ্বোধন করতে পেরে গর্বিত। দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসাল’র আজীবন সদস্য হতে পেরে আরও গর্বিত। অ্যাসাল’র কমিউনিটির জন্য যা করে তা অতুলনীয়। আমরা সবাই আমেরিকা জুড়ে অ্যাসাল’কে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

অনুষ্ঠানে অ্যাসাল’র প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন বলেন, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত অ্যাসাল আমেরিকায় দক্ষিণ এশিয়ান শ্রমিকসহ ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষে ১৪ বছর ধরে নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি মূলধারায় অ্যাসালের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ক্রমবর্ধমান হচ্ছে অভিবাসী সমাজ এবং এর সাথে আমাদের চাহিদা বাড়ছে। মূলধারার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অংশ না হয়ে আমরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি তার সমাধান করা যাবে না। আমাদের নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। শুধু নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ থাকলে চলবে না। সকলের অধিকার আদায়ে আরো বেশী সক্রিয় হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মূলধারার রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয় কমিউনিটির অবস্থান আরও সুসংহত করতে জোরালো ভূমিকা অব্যাহত রাখবে অ্যাসাল।

মূলধারার প্রখ্যাত লেবার লীডার মাফ মিসবাহ উদ্দিন অ্যাসাল প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, লক্ষ্য ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মূলধারার রাজনীতিতে দক্ষিণ এশীয়দের অবস্থান আরো সুসংহত করতে অ্যাসাল দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে বিভিন্ন স্টেট, সিটি এবং কাউন্টিতে ডেমক্র্যাটদের বিজয়ী করতে অ্যাসাল বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। বিভিন্ন নির্বাচনে অ্যাসাল সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। মাফ মিসবাহ বলেন, আগামী ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমক্র্যাট প্রার্থীকে বিপুল বিজয়ের জন্য কাজ করে যাবে অ্যাসাল। তিনি বলেন, অ্যাসাল অত্যন্ত গর্বিত যে, মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা সিনেটর চাক শুমার মূল বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি অ্যাসালের আমন্ত্রণে কনভেনশনে যোগদানের জন্য সকলের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা সিনেটর চাক শুমার অ্যাসাল’র উচ্চ প্রশংসা করে এই মহামারী চলাকালীন কঠোর পরিশ্রম করার জন্য এবং আমেরিকান অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য অ্যাসাল সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “অ্যাসাল হল সংগঠিত শক্তির প্রতীক, এই দেশে দক্ষিণ এশীয়রা আমেরিকান জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং তাদের ছাড়া আমরা আজকের মতো বৈচিত্রময় হতে পারতাম না।”
কনভেনশনে মূলধারার রাজনীতিকরা অংশ নিয়ে অ্যাসালের বিভিন্ন কর্মকান্ডের প্রশংসা করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ানরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আগামীতে তারাই আমেরিকার অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নিয়ামক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবেন। অনেক কিছুই নির্ভর করবে তাদের সমর্থনের ওপর। ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটিকে আশ্বস্ত করে তারা সবসময় ইমিগ্র্যান্টদের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

মূলধারার রাজনীতিকরা বলেন, আমেরিকার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা, ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটির অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মূলধারায় আরো জোরালো অবস্থানে নিতে হবে এশিয়ানদের। তারা বলেন, বাংলাদেশীসহ সাউথ এশিয়ানরা যাতে মার্কিন সংবিধান প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে সক্ষম হন সে লক্ষে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
কনভেনশনে বক্তারা দেশব্যাপি অ্যাসালের বিভিন্ন কর্মকান্ড সহ বিভিন্ন নির্বাচনে অ্যাসালের অসাধারণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে দক্ষিণ এশিয়ানদের স্বার্থে অ্যাসাল-এর কর্মকান্ডে সকলকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। মূলধারার রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয় কমিউনিটির অবস্থান আরও সুসংহত করতে অ্যাসাল’র নিরন্তর পথ চলার আশাবাদ ব্যক্ত করে তারা আরো বলেন, বাংলাদেশীসহ সাউথ এশিয়ানদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা আদায় সহ সকল প্রতিকুলতা অবসানে কাজ করছে অ্যাসাল।
কনভেনশনের শুরুতে শপথ বাক্য পাঠ করান অ্যাসাল স্ট্যাটেন আইল্যান্ড চ্যাপ্টারের ইউথ কমিটির মানহা মেহজাবিন।
১৪ তম বার্ষিক কনভেনশন উপলক্ষে অ্যাসাল ‘দ্য ফোর্টিনথ অ্যানুয়াল কনভেনশন ২০২১’ শিরোণামে তথ্য সমৃদ্ধ একটি বিশেষ জার্নাল প্রকাশ করে।
অনুষ্ঠানে স্টেট ও সিটি গভর্ণমেন্টের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা ও মূলধারাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ অ্যাসালকে প্রক্লেমেশন ও সাইটেশন প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অ্যাসাল’র ১৭ চ্যাপ্টারের সদস্যরা ছাড়াও কংগ্রেসম্যান, নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচিত প্রতিনিধি, কর্মকর্তা, মূলধারার রাজনীতিক, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কমিউনিটি লিডার, সাংবাদিক সহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী অংশ নেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments