ইসলামী আইন
অমুসলিম দেশে নাগরিকত্ব নেওয়ার আগে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখা জরুরি—
মুসলিম রাষ্ট্রে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন সম্ভব না হলে বাধ্য হলে বা প্রয়োজন হলে অমুসলিম দেশে বসবাসের জন্য নাগরিক হতে পারবে। মুসলিম দেশের তুলনায় অমুসলিম দেশকে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম মনে করতে পারবে না। নিজেই ঈমান ও আমল সঠিক ও যথার্থভাবে পূর্ণ করতে পারার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
নিজের চরিত্র ও কর্মপন্থার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য ও শ্রেষ্ঠত্বের দিকে কর্মগত আহ্বানের মনোবৃত্তি থাকতে হবে। ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি হবে—এমন কোনো কাজে জড়িত হতে বাধ্য না হওয়ার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
উপরোক্ত শর্ত পাওয়া গেলে অমুসলিম দেশে নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করা জায়েজ আছে।
তবে অমুসলিমদের ইসলামের প্রতি দাওয়াত দেওয়ার মানসিকতা থাকলে শুধু জায়েজই নয়; বরং সওয়াবেরও অংশীদার হবে।
এ ক্ষেত্রেও যেখানে মুসলমান বেশি থাকে, সেসব এলাকায় বসবাস করাটাই নিজের ঈমান ও আমলের জন্য বেশি নিরাপদ। তবে শুধু নিজের আয়েশ ও আরামের জন্য বা অন্যদের ওপর নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ ও গর্ব করার মানসিকতা নিয়ে অমুসলিম দেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ করা জায়েজ হবে না। (বুহুসুন ফি কাজায়া ফিকহিয়্যা মুআসারাহ : ৩২৯/১-৩৩১)
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদের দেশ থেকে বহিষ্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত : ৮)
সামুরা বিন জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কেউ কোনো মুশরিকের সাহচর্যে থাকলে এবং তাদের সঙ্গে বসবাস করলে সে তাদেরই মতো। ’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮৭)
জারির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি সেসব মুসলিম থেকে দায়মুক্ত, যারা মুশরিকদের মধ্যে বসবাস করে। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল, অর্ধেক রহিত হওয়ার কারণ কী? তিনি বললেন, দুই অঞ্চলের [মুসলিম ও অমুসলিম অঞ্চল] আগুনকে এক দৃষ্টিতে দেখা যাবে না। ’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৬৪৫)