Thursday, June 1, 2023
spot_img
Homeবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি৯৪ বছরে মারা গেলেন ইন্টেলের সহ প্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুর

৯৪ বছরে মারা গেলেন ইন্টেলের সহ প্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুর

ইন্টেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা  সিলিকন ভ্যালির পথপ্রদর্শক সমাজসেবী গর্ডন মুর হাওয়াইতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন । বয়স হয়েছিলো ৯৪ বছর।  মুর ১৯৫০ এর দশকে সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং ইন্টেল কর্পোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠা হিসেবে জনপ্রিয় হন। তিনি তার ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য বিখ্যাত, যা মুরের আইন নামে পরিচিত। মুর বলেছিলেন যে, কম্পিউটার প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা প্রতি বছর দ্বিগুণ হবে।  মুরের আইন কম্পিউটার প্রসেসর শিল্পের ভিত্তি হয়ে ওঠে এবং এই শিল্পে  বিপ্লব ডেকে আনে । কম্পিউটার বিপ্লব শুরু হওয়ার দুই দশক আগে মুর একটি গবেষণাপত্রে লিখেছিলেন যে,  ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটগুলি  হোম কম্পিউটারে নজির সৃষ্টি করবে।  তার এই পর্যবেক্ষণের পর  প্রতি বছর মাইক্রোচিপগুলিতে ট্রানজিস্টরের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়, যেহেতু কয়েক বছর আগে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটগুলি উদ্ভাবিত হয়েছিল। তার ভবিষ্যদ্বাণী মুরের আইন নামে পরিচিতি লাভ করে এবং এটি চিপমেকারদের জন্য আরো গবেষণার দরজা খুলে দেয় । 

মুরের নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পর মেমরি চিপগুলি  আরও দক্ষ এবং কম ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। পিএইচডি অর্জনের পর, মুর ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টর ল্যাবরেটরিতে যোগ দেন যা বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর ট্রানজিস্টর এবং ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট তৈরি করে।

সেই কোম্পানির সম্প্রসারণ হয় সান ফ্রান্সিসকোর দক্ষিণে যা  এখন সিলিকন ভ্যালি নামে পরিচিতে। ১৯৬৮ সালে মুর এবং রবার্ট নয়েস ফেয়ারচাইল্ড ছেড়ে ইন্টেল চালু করেন। মুরের কাজ বিশ্বজুড়ে  প্রযুক্তি ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে সাহায্য করেছে।  ব্যক্তিগত কম্পিউটারের পাশাপাশি    অ্যাপল, ফেসবুক এবং গুগলের জন্ম  দিয়েছে। মুর ২০০৮ সালের একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন -”আমি চিপে আরও বেশি করে জিনিস রেখে  সমস্ত ইলেকট্রনিক্সকে সস্তা করতে যাচ্ছি। ”ইন্টেল কর্পোরেশন তার সহ-প্রতিষ্ঠাতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি টুইটে বলেছে: “আমরা একজন স্বপ্নদর্শীকে হারালাম”। ইন্টেলের বর্তমান সিইও প্যাট গেলসিঞ্জার বলেছেন যে গর্ডন মুর তার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে  শিল্পকে পুষ্ট  করেছেন এবং কয়েক দশক ধরে প্রযুক্তিবিদ এবং উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি এমন একটি উত্তরাধিকার রেখে গেছেন যা গ্রহের প্রতিটি মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। তিনি চিরকাল মানুষের স্মৃতিতে  বেঁচে থাকবেন ।” 

স্ত্রী বেটির সাথে একত্রে ‘গর্ডন এবং বেটি মুর ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে সমাজের উন্নতি সাধনে নিজের বাকি জীবন উৎসর্গ করেছিলেন মুর ।   আমাজন নদীর অববাহিকা এবং স্যামন নদীকে রক্ষা করতে এই সংস্থা নিরন্তর নিজের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে  । ফাউন্ডেশনের সভাপতি হার্ভে ফাইনবার্গ বলেছেন- ”আমরা যারা গর্ডনের সাথে দেখা করেছি এবং কাজ করেছি তারা চিরকাল তার প্রজ্ঞা, নম্রতা এবং উদারতা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি । ‘ ২০০২সালে, মুর রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশের কাছ থেকে মেডেল অফ ফ্রিডম – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানে ভূষিত হন  ।

সূত্র : বিবিসি

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments