Thursday, June 8, 2023
spot_img
Homeধর্ম৮০ বছর বয়সে মাস্টার্স ডিগ্রির পর পিএইচডির প্রস্তুতি মিসরীয় নারীর

৮০ বছর বয়সে মাস্টার্স ডিগ্রির পর পিএইচডির প্রস্তুতি মিসরীয় নারীর

৮০ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন এক মিসরীয় নারী। আমাল ইসমাইল নামের এই নারী মিসরের মানসুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ ডিগ্রি অর্জন করেন। গত রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে স্নাতকোত্তরের থিসিস পর্যালোচনা করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। শিক্ষার সব ধাপ পেরিয়ে এবার তার লক্ষ্য পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা।

আমালের থিসিস পর্যালোচনা কমিটির একজন মন্তব্য করেন, আমালের পরীক্ষা নিয়ে তাঁর ধৈর্য, অধ্যবসায় ও চিন্তার গভীরতা ফুটে উঠেছে। তিনি একজন দৃঢ়প্রত্যয়ী নারী। জীবনের কঠিন সংকটের মধ্যেও নিজ লক্ষ্য পানে নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে চলেন তিনি। থিসিস পর্যালোচনার সময় শিক্ষকদের পাশাপাশি তার সঙ্গে তার সন্তান ও নাতি-নাতনিরাও উপস্থিত থেকে উৎসাহ জুগিয়েছেন। 

আলজাজিরা মুবাশির সূত্রে জানা যায়, মিসরীয় এই নারী ৩৮ বছর বয়সে মাধ্যমিক স্তর সম্পন্ন করেন। এরপর রোগ-ব্যাধি ও পরিবার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সাময়িকভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু পড়াশোনার স্পৃহা হারিয়ে যায়নি তার। ৩০ বছর পর পুনরায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে গিয়ে পৌঁছেন। তার জীবনব্যাপী শিক্ষা যাত্রায় অনুপ্রেরণা দিয়ে পাশে রয়েছেন তার সন্তান ও শিক্ষকরা। 

জীবনের পড়ন্ত বেলায় শিক্ষার প্রেরণা লাভ করেন আমাল। ২০১১ সালে তার মেয়ের একটি উপদেশ নতুন করে বাঁচতে শক্তি জোগায়। কারণ তার মেয়ে তাকে পড়াশোনার বাকি স্তরগুলো শেষ করতে বলেন। তখন থেকে ৭০ বছর বয়সী আমাল পড়াশোনায় নিমগ্ন সময় পার করেন। এরপর উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতকের পর এবার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। 

তবে তার দীর্ঘ এই যাত্রা মোটেও সহজ ছিল না। বরং জীবনের কঠিন থেকে কঠিন মুহূর্তগুলো পার হতে হয়েছে তার। আমাল বর্ণনা করেন, ‘মানসুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টি ভবনের চতুর্থ তলায় আমার ক্লাস হতো। প্রায়ই আমি সেখানে যেতাম। হুইলচেয়ারে করে আমার ছেলে, নাতি ও ক্লাসের অন্য ছাত্ররা আমাকে চলতে সহায়তা করত। একদিন আমি পড়ে আহত হই এবং প্রচণ্ড ব্যথা পাই। তা ছাড়া ২০১৮ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হই। তখন আমার এক নাতি মারা যায়।’

তার মাস্টার্সের থিসিসের শিরোনাম হলো, ‘বয়স্ক ব্যক্তিদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা।’ এখন তিনি বয়স্কদের সামাজিক ভূমিকা নিয়ে পিএইচডি গবেষণার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি বিভিন্ন গ্রামের ২০ জন নারীর জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন। টিভি প্রগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য জানার পাশাপাশি বই পড়ুয়া এই নারীর অধিকাংশ সময় কেটেছে কবিতা, গল্প ও সামাজিক বই পড়ে। 

সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির ও আল-আওসাত

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments