বলহরি (৩২)’র জীবনের ২৫টি বছরই কেটেছে রশি বাঁধা অবস্থায়। দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের হতদরিদ্র রতিকান্ত শীলের ছেলে বলহরিকে তার পরিবার দীর্ঘ ২৫ বছর রশি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। দিনের বেলা বাড়ির গাছের সঙ্গে এবং রাতের বেলা ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় বলহরিকে। ছেলের দুর্দশা দেখে দেখে বলহরির মা ভক্তি রানির চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। আদরের সন্তান এখন বোঝা হয়ে উঠেছে হতদরিদ্র ওই পরিবারের। ভক্তি রানি বলেন, জন্মের পর বলহরি স্বাভাবিক বাচ্চাদের মতো আচরণ করতো। সে স্কুলে যেতো, খেলাধুলা করতো। কিন্তু ৭ বছর বয়স থেকে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে বলহরি, তখন থেকেই তাকে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা শুরু হয়। অর্থাভাবে বলহরির উন্নত চিকিৎসা করানো যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সবুর (৬০) বলেন, বলহরি প্রায়ই তার মা বাবাকে মারধর করে এবং ছাড়া পেলে এলাকার মানুষের বিভিন্নভাবে ক্ষয়ক্ষতি করে।
তাই তাকে তার মা বেঁধে রাখেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলেবেলা থেকেই দেখে আসছি বলহরিকে তার পরিবার বেঁধে রাখেন, কারণ ছেড়ে দিলে অন্য কোথাও হারিয়ে যায় বলহরি। বাঁশবাড়ীয়া ইউপির চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, বলহরির নামে প্রতিবন্ধী ভাতা চালু আছে এবং তার পরিবারকে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঢাকা মানষিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা পেলে ওই যুবক ভালো হতে পারেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে ওই যুবকের চিকিৎসার ব্যপারে চেষ্টা করা হবে।